ঋণের ‘সুদহার’ বাড়াতে চায় বিশ্ব ব্যাংক

বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ায় বিশ্ব ব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের সুদহার (সার্ভিস চার্জ) বাড়াতে চাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2015, 05:33 PM
Updated : 28 Oct 2015, 05:35 PM

অবশ্য সরকার এখনই সুদহার বাড়ানো হোক এমনটি চাচ্ছে না, পাঁচ-ছয় বছর পর বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছে।

বুধবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল এই সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কাইল পিটারসের সঙ্গে বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এ তথ্য জানান।

মুহিত বলেন, “বৈঠকে বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট তাদের ঋণের সার্ভিস চার্জ (সুদহার) বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। আমরা অনেক কম সার্ভিস চার্জ দিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ পেয়ে থাকি। গ্রেস পিরিয়ড থেকে ৪০ বছরে সেই ঋণ শোধ করতে হয়।

“ভবিষ্যতে বেশি চার্জ দিয়ে এই ঋণ পেতে হবে। কারণ তারা এখনই সার্ভিস চার্জ বাড়াতে চায়। কিন্তু আমাদের সরকার এখনই সেটা চাচ্ছে না। আমরা চাই আরও ৫/৬ বছর পর বাড়ানো হোক।”

জাইকাও ঋণের সুদের হার বাড়াতে চিঠি দিয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, “আমরা তাদের (জাইকা) বলেছি, ২০১৮ সালের আগে যেন সুদের হার বাড়ানো না হয়।

“এ কথা ঠিক যে, বিশ্ব ব্যাংকের বিবেচনায় আমরা ইতোমধ্যে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। সে কারণেই হয়তো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের ঋণের সার্ভিস চার্জ বাড়াতে চাইছে।”

“কিন্তু নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে আরও কয়েক বছর লেগে যাবে। সে কারণেই আমরা চাই, বিশ্ব ব্যাংক-জাইকার ঋণের সার্ভিস চার্জ আরও কয়েক বছর পর বাড়ানো হোক।”

এ বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংক ভাইস প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের কিছু বলেননি।

বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে যে ঋণ দিয়ে থাকে তার বেশির ভাগেরে সুদহার দশমিক ৭৫ শতাংশ। এটাকেই সার্ভিস চার্জ বলে থাকে সংস্থাটি।

বৈঠকে বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন খাতে বিশ্ব ব্যাংক বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানান মুহিত।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে তারা সম্ভাবতা যাচাই করেছে। স্বাধীনতার আগে বিশ্ব ব্যাংক নৌ-পরিবহন খাতে বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু দীর্ঘ ৫০ বছর এ খাতে কোনো বিনিয়োগ করেনি। এখন তারা এ খাতে আবার বিনিয়োগ করতে চাইছে।”

বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টকে উদ্ধৃত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “নেপাল-ভুটান- ভারত ও বাংলাদেশকে নিয়ে এশিয়ান পওয়ার কানেক্টিভিটিতে তারা (বিশ্ব ব্যাংক) ‘বড়’ অংকের অর্থ বিনিয়োগ করবে। এ থেকে বাংলাদেশের জ্বালানি খাত লাভবান হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।”

কাইল পিটারস দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার ঢাকা আসেন। শুরুতেই তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন।

পর্যায়ক্রমে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি খাত ও সুশীল সমাজের নেতাদের সঙ্গেও তার বৈঠক করার কথা রয়েছে।

এ ছাড়া তিনি দেশে বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় পরিচালিত কিছু প্রকল্পও পরিদর্শন করবেন বলে বিশ্ব ব্যাংকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।