দুদকের বেসিক ব্যাংক তদন্তে সংসদীয় কমিটির অসন্তোষ

রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2015, 02:24 PM
Updated : 26 August 2015, 03:08 PM

কমিটি অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতির জন্য ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদকে দায়ী করছে। ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদের কাছে ওই সময় সংঘটিত অনিয়মের বিষয়ে একটি প্রতিবেদনও চেয়েছে কমিটি।

বুধবার সংসদীয় কমিটির বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, “পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, দুদক বেসিক ব্যাংক নিয়ে যে তদন্ত করেছে সেখানে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও চেয়ারম্যানকে দায়ী করা হয়নি।

“দুদক যদি না পারে, তাহলে আমরা তদন্ত করব। সেই তদন্তের ফলাফল জাতির সামনে প্রকাশ করব। বিবেকের তাড়নায় আমরা সেটা করব।”

বেসিক ব্যাংকের দিলকুশা, গুলশান ও শান্তিনগর শাখা থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

অনিয়মের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপে গত বছরের ২৫ মে অপসারিত হন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ফখরুল ইসলাম। এর আগে ব্যাংকের আট কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর জুলাই মাসে চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু।

ঋণ জালিয়াতির পাশাপাশি বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারে সহযোগিতারও অভিযোগও রয়েছে। এসব অনিয়ম অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।

বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ২০১০ সালে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তবে তার এক বছর আগে থেকে অনুসন্ধান শুরু হয় বলে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

বর্তামানে দুদক ব্যাংকটির বিভিন্ন কর্মকর্তারা অবৈধ সম্পদ নিয়ে অনুসন্ধান করছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি রাজ্জাক বলেন, “আমরা ব্যাংকটির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ও ম্যানেজমেন্টের কাছে একটি প্রতিবেদন চেয়েছি। ওই সময় বেসিক ব্যাংকে যেসব অনিয়ম হয়েছে, সেগুলো ব্যাংক কোম্পানি আইনসহ প্রচলিত আইনের কোন কোন বিষয় ভঙ্গ হয়েছে, প্রতিবেদনে তা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

“এছাড়া ঋণ জালিয়াতি ও অনিয়মের সঙ্গে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের দায়ও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।”

ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও এমডির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পর্ষদ আসলে উনারা আসবেনই। পর্ষদের এজেন্ডা ঠিক করেন চেয়ারম্যান। তার দায় তো আছেই। পর্ষদও দায় এড়াতে পারে না।”

কমিটির আগামী বৈঠকে এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান রাজ্জাক।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সংসদীয় কমিটিকে বলেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহায়তার কারণে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ব্যাংকটিকে লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ব্যাংকের মুনাফার ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, কমিটির সদস্য নাজমুল হাসান, টিপু মুনশি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও শওকত চৌধুরী অংশ নেন।