দুপুরে কারাগারে পাঠানোর আদেশ, বিকালে জামিন

সংবাদে ‘ভিত্তিহীন ও মানহানিকর তথ্য’ প্রচারের অভিযোগে তথ্য প্রযুক্তি আইনে করা মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জামিনও পেয়েছেন দীপ্ত টিভির এমডি কাজী জাহেদুল হাসান।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2022, 02:26 PM
Updated : 18 July 2022, 02:36 PM

সোমবার চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জহিরুল কবিরের আদালতে আত্মসমর্পণ করে কাজী জাহেদসহ চার আসামি জামিনের আবেদন করেন।

দুপুরে চার আসামিকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। পরে ‘বিশেষ পিটিশন’ দেওয়ায় আবার শুনানি হলে দীপ্ত টিভির এমডি কাজী জাহেদকে জামিন দেওয়া হয়।

তবে অন্য তিন আসামির জামিনের বিষয়ে শুনানি হবে মঙ্গলবার। তারা হলেন- কাজী ফার্মস গ্রুপের পরিচালক কাজী জাহিন হাসান ও কাজী রাবেত হাসান এবং চিফ অপারেটিং অফিসার কাজী উরফী আহম্মদ।

বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারজনই উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিনে ছিলেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তারা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

“তাদের করা জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। পরে মেডিকেল গ্রাউন্ডে জামিনের আবেদন করলে দীপ্ত টিভির এমডিকে জামিন দেওয়া হয়। অন্য তিনজনের আবেদন বিষয়ে শুনানি আগামীকাল হবে।”

আসামিপক্ষের আইনজীবী এএইচএম জিয়া উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুরুতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর হলে তা পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এরমধ্যেই আদালত প্রাঙ্গণে থাকা দীপ্ত টিভির এমডি অসুস্থ বোধ করেন। তখন শারীরিক অবস্থা উল্লেখ করে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।”

শিল্প গোষ্ঠী কাজী ফার্মস গ্রুপেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী জাহেদুল হাসান। এই শিল্প গোষ্ঠীর অধীন কাজী মিডিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান ‘দীপ্ত টিভি’।

দীপ্ত টিভিতে ২০১৬ সালে প্রচারিত একটি সংবাদের জেরে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এবং চকবাজার থানায় তিনটি মামলা করেন আরেক শিল্প গোষ্ঠী সানোয়ারা গ্রুপ অব কোম্পানিজের দুই কর্মকর্তা।

সানোয়ারা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। তার ছেলে সানোয়ারা গ্রুপের এমডি মুজিবুর রহমান। সংবাদ প্রকাশে তাদের মানহানি হওয়ার অভিযোগে মামলাগুলো করা হয়েছিল।

২০১৬ সালের ২২ মার্চ দীপ্ত টিভির সংবাদে ‘চট্টগ্রামে কাজী ফার্মের কর্মীদের উপর হামলা ও মন্ত্রীপুত্রের ভূমি দখলের পাঁয়তারা’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন এবং ওই বছরের ৩১ মার্চ ‘চট্টগ্রামে এক প্রবাস ফেরত ব্যক্তির জমি দখল করে ভবন তৈরি করছে এক মন্ত্রীর ছেলে’ শীর্ষক আরেকটি সংবাদ প্রচারের অভিযোগ করা হয় মামলার এজাহারে।

এতে সাংসদ ও তার ছেলে সুনাম ক্ষুন্ন এবং মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের অভিযোগে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৭ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে তিনটি মামলা হয়।

এরমধ্যে চান্দগাঁও থানায় সানোয়ারা গ্রুপের ম্যানেজার (ভূমি) শেখ আহমদ বাদী হয়ে করা মামলাটিতে এই চারজনসহ মোট আসামি ৯ জন। একই ব্যক্তি চকবাজার থানায় এই চারজনসহ মোট ৭ জনকে আসামি করে একই আইনে অন্য একটি মামলা করেন।

সানোয়ারা পোল্ট্রি এন্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে চান্দগাও থানায় কাজী জাহেদুল হাসান, কাজী জাহিন হাসান, কাজী উরফী আহম্মদ এবং দীপ্ত টেলিভিশনের চট্টগ্রাম প্রতিনিধি রুনা আনসারিকে আসামি করে ৫৭ ধারায় আরেকটি মামলা করেন।

এসব মামলার অন্য আসামিরা জামিনে আছেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী।