সোমবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম আসামিপক্ষকে ‘শেষবারের মত’ সময় দিয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ৬ সেপ্টেম্বর নুতন তারিখ রেখেছেন।
এদিন মামলাটির অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ছিল। কিন্তু দিদারুল আলম মাসুমসহ পাঁচ আসামি মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করায় শুনানি পিছিয়ে যায় বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুক্তিযোদ্ধা মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আজ নির্ধারিত দিনে আমি চার্জগঠনের আবেদন করি। ৫ জন আসামি আজ অব্যাহতির আবেদন করে। এবং এবিষয়ে শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেছে।
“আদালত ‘শেষ বারের মত’ সময় মঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের জন্য ৬ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন।”
যে পাঁচ আসামি অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছেন তারা হলেন- মামলার অভিযোগপত্রে ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে চিহ্নিত দিদারুল আলম মাসুম, আবু জিহাদ সিদ্দিকী, মাঈনুদ্দীন হানিফ, টিপু সুলতান ও মো. শামীম।
পিবিআইয়ের দেওয়া অভিযোগপত্রে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে সুদীপ্ত খুনের ‘নির্দেশদাতা’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রভুক্ত ২৪ আসামির মধ্যে মো. মামুন নামের একজন ছাড়া বাকিরা সবাই এখন জামিনে আছেন।
এ মামলায় বিচার শুরুতে বিলম্বের কারণে হতাশা প্রকাশ করেছে সুদীপ্তের পরিবার। চার দিন আগে এক ফেইসবুক পোস্টে সুদীপ্ত হত্যার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস।
তিনি লিখেছেন “আমাকে যদি ছেলের মত মেরে নাও ফেলে তাহলেও যে গতিতে চলছে, বিচার দেখে যেতে পারব বলে মনে হয় না।
“যেদিন মামলার তারিখ পরে সেদিন ৬৯ বছরের পুত্র শোকগ্রস্ত হাজারো সমস্যায় জর্জরিত এক পিতা আদালতের ভিতরে মাঝামাঝি একপাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একাকী নিঃসঙ্গ ছেলে হত্যার বিচার প্রাপ্তির প্রত্যাশায় দাঁড়িয়ে থাকে। ৫ বছর চলে যাচ্ছে আর কবে কী। হতাশা আমাকে গ্রাস করেছে। ছেলেটা রাজনীতি বুঝত না। বুঝলে মরতে হত না।...”
এর আগে ২০ জুন আসামি পক্ষ সময় প্রার্থনা করায়, ২৬ মার্চ এক আসামি হাজির না থাকায়, ২২ মার্চ বিচারক ছুটিতে থাকায় এবং ১৯ জানুয়ারি আসামিরা সময়ের আবেদন করায় মোট চার দফা অভিযোগ গঠন পিছিয়ে যায়।
২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে দক্ষিণ নালাপাড়ার বাসা থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে খুন করা হয় নগর ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে।
পরে আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
অভিযোগপত্রে নগরীর সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাছুমকে হামলার ‘নির্দেশদাতা’ ও আইনুল কাদের নিপুকে ‘নেতৃত্বদানকারী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়।
আসামিদের মধ্যে ১৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে চারজন আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। পরে তাদের মধ্যে ১৭ জন জামিন পান।
পুরনো খবর