রোববার রাতে নগরীর পূর্বকোণ অফিসের সামনের সড়ক, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, হালিশহর, চকবাজার, বাদুরতলা, কাগাসগোলা, রহমতগঞ্জ, ওয়াপদা, শান্তিবাগ, আনন্দবাজার, কাট্টলীর বিভিন্ন অংশ, ফইল্যাতলি, বাকলিয়ার বিভিন্ন এলাকা, শুলকবহর তলিয়ে যায়।
রাত ১২টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে সর্বোচ্চ ১৭৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
নগরীর মহেশখাল ও হিজড়া খালের কয়েকটি পয়েন্টে পানি খালের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জোয়ারের কারণে কর্ণফুলী দিয়ে পানি নামতে পারছে না।
জলাবদ্ধতা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় একাধিক টিম নিয়ে পানি চলাচলের পথ খোলা রাখতে মাঠে নেমেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
নগরীর হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা আসিম ইমরান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত বাড়ার সাথে সাথে পানি বাড়ছে। অফিস থেকে ফেরার সময় রিকশার সিটের ওপরে বসে বাসার গেট পর্যন্ত এসেছি। রাত ১০টার পর দেখলাম পানি প্রায় বুক সমান উচ্চতায়।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতা নিরসন স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শহরের অনেক জায়গায় পানি ওঠার তথ্য পেয়েছি। আমাদের একাধিক টিম কাজ করছে।
“কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যেখান থেকেই তথ্য আসছে, টিম যাচ্ছে। একটু আগে তথ্য পেয়েছি হালিশহর ওয়াপদা এলাকায় পানি নামছে না। সেখানেও টিম গেছে। পানি প্রবাহ সচল রাখার জন্য আজকে দিনরাত কাজ চলছে।”
রহমতগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা সাইফুল আলম বলেন, “সচরাচর এখানে পানি ওঠে না। রাত সাড়ে ১০টায় দেখি রাস্তায় পানি। বেশি বৃষ্টি তাই রাস্তায় তেমন গাড়িও নেই।”
রাতে সিএনজি অটোরিকশার চালক আবদুল মালেক বলেন, “আজকে সারাদিন শহরের নানা জায়গায় পানি ছিল। রাতে দিনের চাইতেও বেশি পানি। এরকম বৃষ্টি হলে সকাল হতে হতে অবস্থা আরও খারাপ হবে।”
মোবারক আলী বলেন, “বৃষ্টির সাথে জোয়ারের পানি যোগ হয়েছে। জোয়ার থাকায় কর্ণফুলী দিয়ে শহরের পানি নামতে পারছে না। বাঁধ খোলার চেষ্টা করেছি। কয়েকটা বাঁধ সরানো সম্ভব হয়নি। মহেশখালে একটা বাঁধ আছে, হিজড়া খালের রেল ব্রিজের নিচে একটা বাঁধ আছে। সেগুলো সরানো যায়নি। পানি যাতে সরে যেতে পারে সেই জন্য কাজ করছি।
“জোয়ারের কারণে বেশিরভাগ খাল থেকে পানি নামতে পারছে না। পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা আছে। স্কেভেটরসহ অন্য যন্ত্রও কাজে লাগানো হয়েছে।”
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য মতে রাত ১২টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘন্টায় ১৬৪ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আমবাগান আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নগরী ১৭৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার।
এদিকে ভারি বর্ষণের কারণে নগরীতে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেকারণে নগরীর বিভিন্ন পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে বলেও জানান কাউন্সিলর মোবারক আলী।
রাত ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ কন্ট্রোল রুমে কোনো ধরণের প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা দুর্ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি।