অবহেলা: বিএম ডিপোর ৮ জনের নামে মামলা

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় বেসরকারি এ টার্মিনালের আটজনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 June 2022, 09:22 AM
Updated : 8 June 2022, 03:10 PM

আসামিরা হলেন- বিএম কন্টেইনার ডিপোর ডিজিএম (অপারেশন) নুরুল আকতার, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) খালেদুর রহমান, সহকারী অ্যাডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) আবদুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশনের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম, একই বিভাগের নজরুল ইসলাম ও জিএম (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) নাজমুল আকতার খান।

সীতাকুণ্ড থানার এসআই আশরাফ সিদ্দিকী মঙ্গলবার রাতে দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় এ মামলা করেন বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ডিপোতে অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। সেখানে আট জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।”

ডিপো কর্মকর্তাদের আসামি করার কথা জানালেও ‘তদন্তের স্বার্থে’ তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।

পরে থানার একজন কর্মকর্তা আসামিদের নাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত এসপি আশরাফুল বলেন, আসামির তালিকায় ডিপোর কর্মকর্তারা থাকলেও প্রাথমিকভাবে মালিক পক্ষের কাউকে রাখা হয়নি।

“এ ঘটনায় তদন্ত চলছে, তদন্তে যদি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, মালিকদেরও আসামি করা হবে।”

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর একের পর এক বিস্ফোরণে তা ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীদের চার দিনের চেষ্টায় বুধবার সেই আগুন পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়।

বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুই কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে বেসরকারি এই ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটি গড়ে তোলা হয় ২০১১ সালে। এর মালিকানায় আছেন বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার ছোট ভাই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুজিবুর রহমান।

স্মার্ট গ্রুপের আরেক কোম্পানি আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য রাখা ছিল কনটেইনার ডিপোতে। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।

ওই ঘটনায় রোববার পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নয় কর্মীসহ ৪১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার ডিপোর পোড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে দুজনের দেহাবশেষ উদ্ধার করার কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। বুধবার ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ডিপোর এক কর্মী।

এ ঘটনায় হতাহতের বেশিরভাগই ফায়ার সার্ভিস কর্মী, ডিপোর শ্রমিক-কর্মচারী, কন্টেইনারবাহী গাড়ির চালক-সহকারী ও শ্রমিক। আহতদের মধ্যে একশর বেশি মানুষ চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক।