চবিতে নিয়োগ নিয়ে অডিও ফাঁস: জিডি করলেও ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ‘আর্থিক লেনদেন’ নিয়ে যে ফোনালাপের অডিও সম্প্রতি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে,  সে বিষয়ে দুই মাস আগেই জিডি করার কথা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বললেও কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2022, 04:17 PM
Updated : 4 March 2022, 04:17 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস মনিরুল হাসান জানান, ফোনালাপের বিষয়টি তারা আরও দুই মাস আগে জেনেছিলেন।

“এ ফোনালাপের অডিও পেয়েই গত ৯ জানুয়ারি হাটহাজারী থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ প্রত্যাশী দুই ব্যক্তির সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীর আর্থিক লেনদেন নিয়ে আলাপের দুটি অডিও সম্প্রতি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (ডেপুটি রেজিস্ট্রার ) খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব নিয়ামক শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আহমদ হোসেনকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছিল অডিওতে। 

এর মধ্যে রবীনের সঙ্গে এক নিয়োগপ্রার্থীর কথিত ফোনালাপের যে রেকর্ডটি ছড়িয়েছে, তাতে টাকা ছাড়া নিয়োগ না হওয়ার কথা আলোচনা হচ্ছিল।

আর আহমদ হোসেনের ফোনালাপ বলে যেটি ছড়িয়েছে, তাতে শিক্ষক পদে চাকরির জন্য ১৬ লাখ, তৃতীয় শ্রেণির পদে ১০-১২ লাখ ও চতুর্থ শ্রেণির পদে ৮ লাখ টাকা দিতে হবে- এমন আলোচনা হয় এক নিয়োগপ্রার্থীর সঙ্গে।

ফোনালাপ ফাঁসের বিষয়ে দুই মাস আগে কর্তৃপক্ষ জিডি করলেও দুই কর্মীর বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এমনকি বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।

বৃহস্পতিবার রবীনকে উপযার্যের দপ্তর থেকে সরিয়ে তার পূর্ব কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আর আহমদ হোসেনকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই মাস আগে ফোনালাপের অডিও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজরে এলেও কেন অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “ফোনালাপে টাকা দাবির সাথে উপাচার্যের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। উপাচার্যের বিরুদ্ধে এটা মিথ্যাচার।”

তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে কারো কোনো সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।

এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, সরকার ও তার কাজকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ করতে একটি মহল ‘ষড়যন্ত্র’ করছে।

উপাচার্যের দাবি, ফারসি বিভাগে যারা নিয়োগ পাননি, তারাই ‘কথিত টাকা দাবির’ ফোনালাপ ছড়িয়েছে।

উপাচার্য বলেন, "যদি অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হত, তাহলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসত না। আমরাও থানায় অভিযোগ করতাম না। সততা আছে বলেই এ বিষয়ে লড়তে হচ্ছে।"

ফোনালাপের বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার খালেদ রবীন ও হিসাব নিয়ামক শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।