এরই মধ্যে ৯৯টি হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে বাকিগুলোও স্থাপনের কাজ শেষ করতে চায় কর্তৃপক্ষ।
মূলত বন্দর নগরীতে ওয়াসার দুটি পানি সরবরাহ প্রকল্পে দাতা সংস্থার শর্ত পূরণ করতে ‘ফায়ার হাইড্রেন্ট’ বা পানির বিতরণ লাইনের সঙ্গে সংযোগ পয়েন্ট স্থাপনের এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
২০১৯ সালের শুরুতে ‘চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রজেক্ট’-এর আওতায় ২৯টি হাইড্রেন্ট বসানো হয়।
এ বছরের শুরু থেকে ‘কর্ণফুলী ওয়াটার সাপ্লাই প্রজেক্ট’-এর ফেজ-২ এর আওতায় আরও ১৪৪টি হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ চলছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোনো ‘স্ট্যান্ডার্ড নেটওয়ার্ক’ বা মানসম্মত সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরিতে ফায়ার হাইড্রেন্ট অবশ্যই থাকতে হয়।
“দুই প্রকল্পের আওতায় শনিবার পর্যন্ত ৯৯টি হাইড্রেন্ট বসানো হয়েছে। দাতা সংস্থার অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোতে আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানই ডিজাইন ড্রইং করে। এরপর ফায়ার সার্ভিস ড্রইং ডিজাইন রিভিউ করে। তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয়। তারপর নির্ধারিত পয়েন্টগুলো নিয়ে দুই পক্ষ একমত হই।”
সম্প্রতি নগরীর লালখান বাজার, ওয়াসার মোড়, নিউ মার্কেট মোড়, কাজীর দেউড়ি, গোল পাহাড় মোড়, জে এম সেন হল মোড়, হাজারী গলি ও টেরি বাজার সংলগ্ন মোড় এলাকা ঘুরে ফায়ার হাইড্রেন্টের দেখা মিলেছে।
মাটির নিচ দিয়ে যে পথে ওয়াসার পানি সরবরাহ লাইন গেছে, এরকম স্থানে মূল সড়কের পাশে এসব সংযোগ পয়েন্ট (ফায়ার হাইড্রেন্ট) স্থাপন করা হয়েছে। অবশ্য এর উপযোগিতা নিয়ে সাধারণ মানুষের খুব বোশি ধারণা নেই।
নতুন বসানো এসব হাইড্রেন্ট ঘিরে কোথাও সবজি বিক্রি হচ্ছে। কোথাও হাইড্রেন্ট ঘেষে পান-সিগারেটের দোকান বসেছে। আর হাইড্রেন্টের ভিত্তির ওপর সেসব দোকানের জিনিসপত্রও রাখা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ২০১৯ সালে বন্দরনগরীতে জরিপ করে ঝুঁকিপূর্ণ ও অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার তালিকা করে।
চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক (বর্তমান কর্মস্থল ফেনী) পূর্ণ চন্দ্র মুৎসুদ্দী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অগ্নি ঝুঁকি বিবেচনায় ২৮০টি স্থানে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানোর প্রস্তাব করেছিলাম। এখন এগুলো বসানো হচ্ছে, যা অগ্নি নির্বাপনে খুব সহায়ক হবে। সংখ্যা বাড়ানো গেলে আরো ভালো হয়।”
এ নগরে প্রায় দুই লাখ দোকান আছে জানিয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খুরশিদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেশিরভাগ বিপণি কেন্দ্রের আশেপাশে পানি পাওয়া খুব কঠিন। পানির অভাবে আগুন নেভাতে দেরি হলে সর্বস্ব হারায় ব্যবসায়ীরা।
চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী বলেন, সবগুলো হাইড্রেন্ট স্থাপনের কাজ শেষ হলে আমরা এগুলোর চাবি ফায়ার সার্ভিসকে বুঝিয়ে দেব। যাতে প্রয়োজনে তারা খুলে পানি নিতে পারে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ আমরা করব, নিজস্ব তহবিল থেকে।”
ফায়ার সার্ভিস চাইলে হাইড্রেন্টের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলেও জানান ওয়াসার এই কর্মকর্তা।