শনিবার চট্টগ্রাম পুরাতন রেল স্টেশনে রেলওয়ে কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট্রের প্রস্তাবিত বহুতল ভবন নির্মাণের একটি স্থান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রেলমন্ত্রীর কাছে তার আগের বক্তব্য উদ্ধৃত করে জানতে চাওয়া হয়, আপনি বলেছিলেন চট্টগ্রামের মানুষ না চাইলে সিআরবিতে হাসপাতাল হবে না। এখন আপনার বক্তব্য কী?
জবাবে তিনি বলেন, “এটা তো আমরা জনগণের জন্যই করছি। কিন্তু এখন চিটাগাংয়ের জনগণ বলতে আমরা… কী বুঝব এটাও তো আপেক্ষিক ব্যাপার। আমি বললাম যে, আমি চিটাগাংয়ের জনগণের কথা বলতেছি। আমি চিটাগাংয়ের কত পারসেন্ট লোকের রিপ্রেজেন্ট করি, এগুলোও তো প্রশ্ন আসে।
“আপনারা যদি না চান…। আমাদের জনপ্রতিনিধি তো আছেন, মন্ত্রী তো আছেন, এমপি আছেন; আছেন না? প্রতিনিধিরা আছেন। তারা যদি সবাই মিলে বলে, যে প্রয়োজন নাই। তাহলে কী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তার বিরুদ্ধে যাবে? আমরা যাব? দরকার কী?”
এর আগে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, সিআরবিতে হাসপাতাল প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে মূলত পিপিপিতে (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ)। সরকারের যে নীতি, ৩০ শতাংশ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে পিপিপির মাধ্যমে। এখানে একটা কর্তৃপক্ষ করা হয়েছে; প্রধানমন্ত্রীর অফিসে।
“সেটা ইনিশিয়েট করে ওখান থেকে মোটামুটিভাবে যখন মাঠ পর্যায়ে গেছে, তখন কিন্তু অভিযোগ পাল্টা অভিযোগগুলো আসছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
“যাই কিছু হোক না কেন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়েই আমাদের সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”
রেলমন্ত্রী বলেন, “যেহেতু প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তক্রমে সেখান থেকে এটা হয়েছে, রেল মন্ত্রণালয়ের ভিন্ন কোনো মত বা চিন্তা থাকলেও আমরা অথরিটি না সেটার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য। পক্ষে-বিপক্ষে যাই হোক। সেটা আলাপ-আলোচনা চলছে।
“এখন প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন, উনার অফিস থেকে সেভাবেই হবে।”
পরে গত বছরের জুলাই মাসে প্রকল্প এলাকার জমি হাসপাতাল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া উদ্যোগ নেওয়া হলে প্রতিবাদ ও আন্দোলন শুরু হয়।
চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এ প্রকল্প সিআরবিতে না করার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে কালুরঘাট সেতুর বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী বলেন, “কালুরঘাট সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই ও নকশার কাজ চলছে। সেতুর বর্তমান উচ্চতা ৪ দশমিক ৬ মিটার। নৌযান চলাচলের জন্য এটি ১২ দশমিক ২ মিটার উচ্চতায় নির্মাণ করতে হবে। এ বিষয়ে কাজ চলছে।”
রেলের জমিতে বেসরকারি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সরকার নিজে ব্যবসা করে না, যারা ব্যবসা করছে তাদের সহযোগিতা করছে। সরকারের নীতি তাই। রেলের ভূমি যেটা আমাদের উন্নয়নের কাজে লাগবে না, যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে সেটা যেন ব্যবহার হয়।
“অনেকে জমি দখল করে বসে আছে। আগে সেদিকে রেলের নজর ছিল না। এখন আছে।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন।