সাতকানিয়ায় এমপির শ্যালক নৌকার প্রার্থী, অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থীর

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একটি ইউনিয়নে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী স্থানীয় সংসদ সদস্যের শ্যালকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Jan 2022, 12:27 PM
Updated : 26 Jan 2022, 01:49 PM

১ নম্বর চরতি ইউনিয়ন পরিষদে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মঈনুদ্দীন চৌধুরী বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।

মঈনুদ্দিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তবে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি।

সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রুহুল্লাহ চৌধুরী তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে উল্টো দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে মঈনুদ্দিনের প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

রুহুল্লাহ জামায়াত ইসলামীর সাবেক মজলিসে শূরার সদস্য প্রয়াত মমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে। তিনি যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা গোলাম আজম, আব্দুল কাদের কাদের মোল্লা ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গায়েবানা জানাজায় ইমামতি করেছিলেন। 

রুহুল্লাহ সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্যালক।

আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি চরতি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে।

সংবাদ সম্মেলনে মঈনুদ্দিন অভিযোগ করেন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগের দিন গত ২১ জানুয়ারি রাতে ৫০/৬০ জন মুখোশধারী দক্ষিণ চরতিতে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসে। পরদিন একইভাবে নগরীর ওমর আলী মাতুব্বর সড়কের নিজের ও মেয়ের বাসায় গিয়েও হুমকি দেওয়া হয়।

এছাড়া পুলিশ পরিচয়েও তাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন মঈনুদ্দিন।

মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে তিনিসহ পাঁচজনের নাম আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছিল। গত ৬ জানুয়ারি বোর্ডের সভায় সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি প্রদীপ কুমার চৌধুরীকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হয়েছে বলে খবর পান তারা। তিনি বলেন, “প্রদীপ চৌধুরীর মনোনয়ন মেনে নিয়ে আমরা ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে চলে আসি। কিন্তু পরদিন দেখা যায়, প্রদীপ চৌধুরীর স্থলে জামায়াত ইসলামীর সাবেক মজলিসে শূরা সদস্য মমিনুল হক চৌধুরীর ছেলে রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান পদে।”

সংসদ সদস্য নদভীর শ্যালক রুহুল্লাহ এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নির্বাচন করতে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান মঈনুদ্দীন।

মঈনুদ্দিনের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে রুহুল্লাহ চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এলাকায় তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় তিনি এলাকায় না গিয়ে শহরে বসে এসব অমূলক কথাবার্তা বলছেন।”

জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার বাবা জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। কিন্তু আমি তো জামায়াতের রাজনীতি সাথে সম্পৃক্ত না।”

রুহুল্লাহ পাল্টা বলেন- “তিনি (মঈনুদ্দীন) নিজেকে আওয়ামী পরিবারের সন্তান দাবি করেন। যদি আওয়ামী পরিবারের সন্তান হয়ে থাকেন, তাহলে কেন নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন?”

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নিজের প্রার্থী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে মঈনুদ্দিন বলেন, “যেটা (রুহুল্লাহকে মনোনয়ন) মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তির পরিবারের সদস্য হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত লজ্জা, দুঃখ ও হতাশাজনক ছিল। নৌকা মার্কায় রাজাকারের উত্তরসুরিকে মানতে না পেরে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি।”