সোয়া ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ: বিএনপির আসলামসহ ৪ জনের বিচার শুরু

এবি ব্যাংকের সোয়া ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করেছে চট্টগ্রামের আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Jan 2022, 10:38 AM
Updated : 6 Jan 2022, 10:38 AM

চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুনসি আবদুল মজিদ বৃহস্পতিবার আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর জন্য ২ মার্চ দিন রাখেন।

অভিযোগ গঠনের সময় আসামিদের মধ্যে কেবল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম আদালতে উপস্থিতি ছিলেন বলে দুদকের আইনজীবী কাজী সানোয়ার আহমেদ লাভলু জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, অপর আসামিদের মধ্যে তার স্ত্রী জামিলা নাজনীন মাওলা জামিনে ছিলেন। আর আসলামের দুই ভাই জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও আমজাদ হোসেন চৌধুরী পলাতক। তাদের সবার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।

বেসরকারি এবি ব্যাংকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৬ সালের ১৭ জুলাই দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মানিকলাল দাশ বাদি হয়ে মামলাটি করেছিলেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসলাম চৌধুরীর পারিবারিক মালিকানাধীন রাইজিং স্টিল লিমিটেড পুরাতন জাহাজ ক্রয়ের জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনটি ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতে এবি ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে ৩২৫ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৫ টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করেননি।

রাইজিং স্টার লিমিটেড ওই শাখায় প্রথম এলসি খোলে ২০০৮ সালে। দুই বছর পর প্রতিষ্ঠানটি ৪০ কোটি ৯৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা দামে পুরনো জাহাজ আমদানি করে তা বিক্রি করলেও ব্যাংকের ঋণ পুরোটা পরিশোধ করেনি।

প্রতিষ্ঠানটির কাছে ব্যাংক ২০ কোটি ৮২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা পাওনা থাকার পরেও ২০১১ সালে আরও একটি এলসির মাধ্যমে একটি জাহাজ আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। এই এলসির বিপরীতেও প্রতিষ্ঠানটি ২৬ কোটি ৪৫ লাখ ৯৮ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করেনি।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে ১৬৫ কোটি ৫২ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা ও ২০১৩ সালে ১৩৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৬ হাজার টাকার দুটি এলসির বিপরীতে আরও দুটি জাহাজ আমদানি করে তা বাজারে বিক্রি করলেও কোনো টাকা পরিশোধ করেনি।

বিপুল পরিমাণ ঋণের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটি ১৭ কোটি ৪০ লাখ ৮৮ হাজার টাকা মূল্যের সম্পত্তির দুটি দলিল ও তিনটি চেক জামানত হিসেবে দেয়। জামিনদার ছিলেন আসলাম চৌধুরী নিজেই।

আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় দণ্ডিবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় মামলাটি করা হয়। ২০১৭ সালের ৮ অগাস্ট তদন্ত শেষে দুদক এই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেয়।

ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন লিকুদ পাটির সদস্য মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে একটি ছবি গণমাধ্যমে আসার পর তা নিয়ে আলোচনার মধ্যে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন আসলাম, তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের মামলা করা হয়।