রাইড শেয়ারের আড়ালে ছিনতাইয়ে ‘সহায়তা’

রাইড শেয়ারের বাইক চালানোর পাশাপাশি নগদ টাকা বহনকারীদের ওপর নজর থাকত দুজনের, আর তাদের দেওয়া তথ্যে ছিনতাই করত দুই ‘পেশাদার’ ছিনতাইকারী; একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ওই চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রামের পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 Jan 2022, 01:34 PM
Updated : 4 Jan 2022, 01:34 PM

বন্দরনগরীর ইপিজেড ও বাকলিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোমবার রাতে ওই তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পতেঙ্গা থানার ওসি কবির হোসেন জানান।

পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার তিন জনের মধ্যে সাত্তার শাহ ওরফে ডিপজলের (৪১) বিরুদ্ধে ছিনতাইসহ ১৯টি মামলা রয়েছে থানায়। তার সহযোগী রাজু দেবনাথও (৩৬) একজন ছিনতাইকারী। আর আব্দুল্লাহ আল মারুফ (২২) রাইড শেয়ারে বাইক চালানোর পাশাপাশি ছিনতাইয়ের জন্য তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতেন।

গত ৫ ডিসেম্বর পতেঙ্গা মাইজপাড়া এলাকায় বিকাশের এক ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসারকে ছুরি মেরে টাকা ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে মোটরসাইকেল আরোহী তিনজন।

ওই ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল এবং আশপাশের পাঁচ কিলোমিটার এলাকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও দেখে ডিপজল ও রাজুকে শনাক্ত করে বলে জানান ওসি কবির হোসেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, অবস্থান জানার পর সোমবার রাতে ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের খালপাড় এলাকায় ডিপজলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে রাজুর দেওয়া তথ্যে বাকলিয়া থানার শাহ আমানত ব্রিজ এলাকা থেকে ছিনতাই চেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও চালক মারুফকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মারুফ পুলিশকে বলেছেন, তিনি ও রুবেল নামের আরেকজন রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে মোটর সাইকেল চালান। রুবেল তাকে জানায়, মাইজপাড়া এলাকায় বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন সেলস অফিসার আসলাম প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা বহন করেন। মারুফ পরে বিষয়টি রাজুকে জানান। এরপর রাজু তা ডিপজলের কানে পৌঁছে দেন।

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার দিন মারুফের বাইকে ডিপজল ও রাজু পতেঙ্গা কন্ট্রোল মোড় এলাকায় অবস্থান নেন। আর রুবেল আরেকটি বাইক নিয়ে দূর থেকে আসলামকে দেখিয়ে দেন।

আসলাম ওই পথ দিয়ে পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তার ব্যাগ ধরে টান দেয় ছিনতাইকারীরা। আসলাম ব্যাগ না ছাড়ায় তার হাতে ছুরি মারা হয়। এ সময় আসলামের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে গেলে ছিনতাইকারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়।

ওসি কবির হোসেন বলেন, তিনজনকে ধরার পর রুবেলকে ধরতে পটিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ, কিন্তু তাকে ধরা যায়নি।

মিলল ইয়াবা, অস্ত্র ও জাল টাকা

সোমবার ডিপজলের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে একটি এলজি এবং এক রাউন্ড কার্তুজ, পাঁচটি জাল এক হাজার টাকার নোট উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি ৫০০ ইয়াবাও পাওয়া যায় বলে জানান ওসি কবির হোসেন।

ছিনতাইয়ের পাশাপাশি ডিপজল মাদকের কারবারে জড়িত জানিয়ে ওসি বলেন, মাদক উদ্ধারের ঘটনায় ডিপজলের স্ত্রী রোজিনা বেগমকেও (২৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ইপিজেড থানায় তিনটি মামলা করা হয়েছে।

তিন মামলার মধ্যে অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় ডিপজলকে এবং মাদক মামলায় ডিপজল ও তার স্ত্রী রোজিনাকে আসামি করা হয়েছে।