চট্টগ্রামে হেলে পড়া ভবনের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে

চট্টগ্রাম মহানগরীর মাঝিরঘাটে খাল খননের কারণে হেলে পড়া দুটি ভবন ও মন্দির থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার পর সেগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে ফেলার কাজ শুরুর করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Dec 2021, 11:02 AM
Updated : 21 Dec 2021, 11:02 AM

এদিকে হেলে পড়া ভবনের বাসিন্দারা তাদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে মঙ্গলবার মাঝিরঘাট স্ট্র্যান্ডরোড এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ।

সোমবার রাতে স্ট্র্যান্ড রোড সংলগ্ন পার্বতী ফকিরপাড়া এলাকায় গুলজার খালের পাড়ে তিনতলা ও দোতলা দুটি ভবন হেলে পড়ে; পাশের একটি মন্দিরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রাতেই খাল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ভবন দুটির লোকজন সরে গেলেও সকালবেলা ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা গিয়ে আশপাশের কয়েকটি পরিবারকে সরিয়ে দেয়।

মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, হেলে পড়া ভবন দুটির ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেছেন সিডিএ কর্মীরা।

চট্টগ্রাম শহরের মাঝিরঘাট স্ট্যান্ড রোডসংলগ্ন পার্বতী ফকিরপাড়া এলাকায় খাল খননের সময় মাটি সরে সোমবার রাতে তিনতলা ও দোতলা দুটি ভবন হেলে পড়ে। ছবি: সুমন বাবু

ভবন দুটির লাগোয়া গুলজার খালে সিডিএ এর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের খনন কাজ কাজ করছেন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা।

এলাকাবাসীর দাবি, খনন কাজের ফলে ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে হেলে পড়েছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন ভবন ভেঙে ফেলার কারণে তারা আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।

দোতলা ভবনটির বাসিন্দা আরতি দাশ বলেন, “খালের প্রতিরোধ দেয়ালের কাজ শুরু করার পর থেকে আশপাশের ভবনগুলো হেলে পড়তে শুরু করে। সিডিএকে বারবার বলা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের আর্থিক সঙ্গতিও ভালো নয়। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পথে বসতে হবে।”

সিডিএ এর অথরাইজেশন অফিসার-২ প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভবনগুলোর কোনো অনুমোদন নেই। তারা সিডিএ এর প্ল্যান না নিয়ে বাড়ি করেছে।”

চট্টগ্রাম মহানগরীর মাঝিরঘাট এলাকায় গুলজার খাল খননের কাজ চলার মধ্যে পাশের দুটি ভবন ও একটি মন্দির হেলে পড়েছে। ঝুঁকিতে আছে আরও বেশ কয়েকটি সেমিপাকা ঘরও। ছবি: সুমন বাবু

খালের খনন কাজের জন্য ‘আগে থেকে সতর্ক করা হলেও তারা কান দেয়নি’ দাবি করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এই কর্মকর্তা বলেন, “আমরা আপাতত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কিছু অংশ ভেঙে দিচ্ছি। এতে ঝুঁকি কমবে, পাশাপাশি পরে মালিকরা নিয়ম অনুযায়ী ভবন আবার নির্মাণ করতে পারবেন।”

হেলে পড়া ভবন দুটির মধ্যে তিন তলা ভবনটি স্বপন দাশ এবং তার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন। আর দোতলা ভবনটির মালিক শ্যামল দাশ নামের এক ব্যক্তি।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত পার্বতী ফকির পাড়ার কয়েকশ নারী পুরুষ মাঝিরঘাট স্ট্র্যান্ড রোডে অবস্থান নিয়ে আশ্রয় এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি নন্দিতা দাশ বলেন, “আমাদের এখানকার অবৈধ নাগরিক বলা হচ্ছে। খাল খননের কারণে ভবন হেলে গেছে। সিডিএ এর জন্য দায়ী। কোনো কথা ছাড়াই ভবন ভেঙে ফেলছে। আমরা এখন কোথায় যাব? আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই।”