কারিতাসের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে বছরব্যাপী কর্মসূচি শুরু

‘ভালোবাসা ও সেবায় ৫০ বছরের পথ চলা’- এই স্লোগান নিয়ে বছরব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন শুরু করেছে বেসরকারি সংস্থা কারিতাস বাংলাদেশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Nov 2021, 07:27 PM
Updated : 25 Nov 2021, 07:27 PM

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের মোটেল সৈকতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। এরআগে একটি শোভাযাত্রা পাথরঘাটায় অবস্থিত সেন্ট প্লাসিডস্ হাইস্কুল ও কলেজ মাঠ হতে শুরু হয়ে হোটেল সৈকত প্রাঙ্গণে শেষ হয়।

উৎসব প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ, ফটো গ্যালারি উন্মোচন, প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আগামী বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বছরব্যাপী সারাদেশে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে কারিতাস বাংলাদেশ যার উদ্বোধন হল চট্টগ্রাম থেকে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে কারিতাস বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক সেবাষ্টিয়ান রোজারিও বিগত ৫০ বছরের ধারাবাহিকতায় মানুষ ও দেশের উন্নয়নে কার্যক্রমের ধারা আরো বেগবান করার অঙ্গীকার করেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) প্রকাশ কান্তি চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নে ৫০ বছরে স্বাস্থ্য শিক্ষা কৃষি পরিবেশ সুরক্ষা খাতে কারিতাস বিভিন্নভাবে অবদান রেখে চলেছে। প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যায়নের জন্য কারিতাসে ৫০ বছরের কর্মকান্ড নিয়ে গবেষণা হওয়া প্রয়োজন। কারিতাসের যেসব সফলতা আছে তা অন্যান্য উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের জন্য গাইড লাইন হতে পারে।”

বিশেষ অতিথি কারিতাস এশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. বেনেডিক্ট আলো ডি রোজারিও বলেন, “এ এক গৌরবময় মুহূর্ত, আনন্দের ও উদযাপনের ক্ষণ। কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ স্রষ্টা ও জনগণের প্রতি। প্রাকৃতিক দুযোর্গের পাশাপাশি সামাজিক দুযোর্গের প্রতিও সাড়া দেয়া দরকার।”

বিশেষ অতিথি কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি রোজারিও বলেন, “যখন দুর্যোগ হয় তখন সুযোগ আসে। বাংলাদেশে সত্তর দশকে দুটো দুর্যোগ এসেছে- প্রাকৃতিক ও মনুষ্য সৃষ্ট। এ দুর্যোগে ঈশ্বরের দান কারিতাস। এদেশের মাটিতে দেশিয় সংস্কৃতিকে নিয়ে কারিতাস সুন্দরভাবে বিকশিত হয়েছে।

“দেশ গঠনে আমরা বিনিয়োগ করেছি। যার সুফল গত ৫০ বছরে পেয়েছি আরো পাব ভবিষ্যতে। সেজন্য নতুন যাত্রা শুরু করতে হবে। বৃত্ত থেকে বিন্দুতে আসতে হবে। দরিদ্রদের কথা শুনতে হবে। সমাজের বিন্দু হলো পরিবার, মূল্যবোধ সেখানে। বিন্দুর দিকে যাত্রা মানবিকতা সৃষ্টির জন্য।”

সভাপতির বক্তব্যে কারিতাস বাংলাদেশ এর প্রেসিডেন্ট জেমস রমেন বৈরাগী বলেন, “দরিদ্র ও শিক্ষার আলোহীন মানুষ আজ নানা ভাবে বন্দি। তাদের আলোর পথে তুলে আনতে হবে। আমাদের ভালো প্রকল্পগুলো কিভাবে নিজস্ব ক্ষমতায় বা অর্থায়নে পরিচালিত করতে পারি তা ভাবতে হবে।”

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় এন ডি ক্রুজ, আর্চবিশপ লরেন্স সুব্রত হাওলাদার, ব্রাদার লরেন্স ডায়েস সিএসসি, ভারতের আগরতলার বিশপ লুমেন মন্তেরো ও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের সকল ক্যাথলিক বিশপগণ।

অনুষ্ঠানে কারিতাসের জন্ম ইতিহাস তুলে ধরেন ব্রাদার লরেন্স ডায়েস। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কারিতাস বাংলাদেশের পরিচালক (কর্মসূচি) জেমস গোমেজ, পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) যোয়াকিম গমেজ ও আঞ্চলিক পরিচালক সুক্লেশ জর্জ কস্তা।

দেশের ৫৩ জেলার ১৮৭টি উপজেলায় কারিতাস কাজ করছে। সংস্থাটির বর্তমান প্রকল্প সংখ্যা ১১২টি, ট্রাস্ট রয়েছে তিনটি এবং সুফলভোগীর সংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ মানুষ।