৩০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার, চট্টগ্রাম মেডিকেল খুলছে ২৭ নভেম্বর

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2021, 11:06 AM
Updated : 23 Nov 2021, 12:33 PM

সেই সঙ্গে আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকে।  

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই বৈঠক শেষে অধ্যক্ষ শাহেনা আক্তার ৩০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের ‘শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত থাকায় আট শিক্ষার্থীকে দুই বছরের জন্য, দুইজনকে দেড় বছরের জন্য এবং বাকি ২০ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এই সময়ে তারা কোনো ধরনের শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবে না বলে জানান অধ্যক্ষ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ২৭ নভেম্বর কলেজ খোলার দিনই ছাত্রীনিবাস খুলে দেওয়া হবে। তবে ছাত্রাবাস দুটি খোলা হবে সিট বরাদ্দের পর।

“ছাত্রাবাসে আসন বরাদ্দ পেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ইতোপূর্বে আবেদন করতে বলা হলেও তারা করেনি। এবার আবেদন করলে যাচাই করে হোস্টেল কমিটি আসন বরাদ্দ দেবে, তারপর দুই ছাত্রাবাস খুলবে।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাত্রলীগের পক্ষ দুটি গত তিন বছরে বেশ কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। তবে এবারই প্রথম কারো বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হল।

গত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর সকালে মেডিকেল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এরপর কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

ওই ঘটনা তদন্তে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটি সোমবার প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে বিবাদমান দুটি পক্ষকেই দায়ী করে কিছু পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব পর্যবেক্ষণও বিবেচনায় নেওয়া হয়।

৩০ অক্টোবর সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি জে আকিব। কলেজ ক্যাম্পাসের অদূরে পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারের সামনে হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি।

তার ওপরে ধারালো অস্ত্র, রড, ছুরি ও কাঁচের বোতল নিয়ে হামলা চালানো হয়। মাথায় অস্ত্রোপচারের পর ১৯দিন তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিতে হয়।

আকিবের পক্ষের নেতাদের দাবি, হাসপাতালকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি, দালালি, স্লিপ বাণিজ্য, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটসহ নানা অবৈধ কারবারের ‘প্রতিবাদ করায়’ প্রতিপক্ষ আকিবের ওপর হামলা করে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষ সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। এ পক্ষটিই দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বজায় রেখেছে।

অন্য পক্ষটি প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। তার মৃত্যুর পর তারা নিজেদের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেয়। যদিও সবশেষ ৩০ অক্টোবরের ঘটনার পর নওফেল দাবি করেন, তার কোনো পক্ষ সেখানে নেই।