কোকেন চোরাচালান মামলায় অভিযোগ গঠন পেছাল

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে তরল কোকেন আমদানির ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2021, 03:11 PM
Updated : 25 Oct 2021, 03:11 PM

সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালতে এই শুনানির তারিখ থাকলেও বিচারক ‍ছুটিতে থাকায় তা হয়নি।

তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর নতুন তারিখ ঠিক করে দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কোকেন উদ্ধারের ঘটনায় করা মাদক আইনের মামলায় এদিন সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ছিল।

“একজন ম্যাজিস্ট্রেট সাক্ষ্য দিতে আদালতেও এসেছিলেন। কিন্তু তিনি অসুস্থ বোধ করায় সাক্ষ্যগ্রহণ আর হয়নি।”

এ মামলায় আসামি মো. গোলাম মোস্তফা সোহেলের পক্ষে গত ৩০ জুন জামিনের আবেদন করা হলেও তা নামঞ্জুর করে আদালত।

মাদক মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। মহামারীতে আদালতের কার্যক্রম প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সর্বশেষ গত ৫ অক্টোবর তিনজন সাক্ষী মাদক মামলায় সাক্ষ্য দেন। সেদিন ২৫ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছিল।

২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

একই ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ জুন সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়ে। মামলাটি এখন অভিযোগ গঠনের শুনানির অপেক্ষায়।

এ মামলার আসামিরা হলেন- আমদানিকারক কোম্পানি খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপাক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) একেএম আজাদ রহমান, সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০১৫ সালের ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ওই বছরের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।

পরে আদালতের নির্দেশে কন্টেইনার খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়।

দুই পরীক্ষাগারেই নমুনা পরীক্ষা করে ১০৭টি ড্রামের মধ্যে দুটিতে ৩৭০ লিটার তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।

এ ঘটনায় ২৭ জুন চট্টগ্রামের বন্দর থানায় নূর মোহাম্মদ ও গোলাম মোস্তফা সোহেলকে আসামি করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। পরে আদালত চোরাচালানের ধারা সংযোজনের নির্দেশ দেয়।

এই দুই মামলার আসামিদের মধ্যে নূর মোহাম্মদ জামিনে গিয়ে পলাতক হয়েছেন। তার ভাই মোস্তক আহম্মদ শুরু থেকেই পলাতক।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান এবং বকুল মিয়াকেও পলাতক দেখানো হয়েছে। কারাগারে আছেন গোলাম মোস্তফা সোহেল এবং আতিকুর রহমান। বাকি চার আসামি জামিনে আছেন।

আরও পড়ুন