সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঐক্য পরিষদের ডাকে শনিবার দেশব্যাপী গণঅবস্থানের অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের কর্মসূচিতে এই দাবি জানান তিনি।
আগামী ৪ নভেম্বর শ্যামা পূজায় দীপাবলী উৎসব বর্জনসহ বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের প্রতিবাদী কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশেরও ঘোষণা দেওয়া হয় চট্টগ্রামের এ অবস্থান কর্মসুচি থেকে।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনসহ ১১ দফা দাবি জানানো হয় কর্মসূচি থেকে।
অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে- সাম্প্রদায়িক হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সব মন্দির, ঘরবাড়ি পুনঃনির্মাণ, গৃহহীনদের পুনর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং পরিবারের এক জন সদস্যকে যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান।
নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারী ও ইন্ধনদাতাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় ট্রাইবুন্যাল গঠন করে দ্রুত সময়ে শাস্তি নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়েছে।
সোশাল মিডিয়া ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতাদের চিহ্নিত করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে বিচারের দাবিও জানানো হয়েছে।
গণঅবস্থান থেকে ঘোষিত এসব দাবির অগ্রগতি পর্যালোচনা রেখে প্রয়োজনে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে দাবির সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রার ঘোষণা দেন রানা দাশ গুপ্ত।
দেশব্যাপী কর্মসুচির অংশ হিসেবে শনিবার সকাল ৬টা থেকে চট্টগ্রাম নগরী এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিভিন্ন বয়েসী লোকজন এসে আন্দরকিল্লা মোড়ে সমবেত হয়।
অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দে’র সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জাসদ নেতা ইন্দু নন্দন দে, ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি শ্যামল মিত্রসহ বিভিন্ন মঠ, মন্দির পরিচালনা পরিষদের নেতারা।
এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন।
রণজিৎ দে বলেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী যে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন তা মুখে বললে হবে না বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফলে অতীতে অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।”
সংবিধানের চার মূলনীতি ‘হসপিটালাইজড’ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এরশাদ রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার কেন সেটা বাদ দেয়নি?
“দেশের বিভিন্ন উপজেলায় মডেল মসজিদ হয়েছে। প্রতি উপজেলায় ৫৭০টি মডেল মন্দির, মসজিদ, গীর্জা, প্যাগোডা তৈরি করে বাঙালী জাতীয়তাবাদের পরিচয় দেন।”
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী বলেন, “সারা দেশে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, তা সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এ আন্দোলন বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি ফিরিয়ে আনতে সাম্প্রদায়িক শাক্তির বিরুদ্ধে।”