চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ডিসেম্বরের পর

ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের পর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সম্মেলন করার পরিকল্পনা করেছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2021, 05:52 PM
Updated : 9 Oct 2021, 05:52 PM

শনিবার বিকেলে সার্কিট হাউজে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

তবে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে দ্রুত তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করার তাগাদাও দিয়েছেন কেন্দ্রীর নেতারা। 

তিন ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, “ইতিমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগ বৈঠক করে আলোচনা করে প্রত্যেকটা ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ইউনিট পর্যায়ে কাউন্সিলের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

“আশা করি, যে পদ্ধতিতে মহানগর আওয়ামী লীগ কাজ শুরু করেছে ইউনিট এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিল আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।”

হানিফ বলেন, “এমন কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই যে ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করতে হবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য আছে ডিসেম্বরের মধ্যে মহানগরের প্রত্যেকটা ইউনিট ও ওয়ার্ডে কাউন্সিলটা শেষ করার জন্য। সে পরিকল্পনা নিয়েই তারা এগোচ্ছে।

“প্রত্যেকটা ইউনিট, থানা, ওয়ার্ড এবং মহানগর আওয়ামী লীগকে কাউন্সিলের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করা এটাই লক্ষ্য।”

৪৩টি ওয়ার্ড ও ১৫টি থানা কমিটি আছে নগর কমিটির অধীনে। প্রতিটি ওয়ার্ডের অধীনে আছে তিনটি করে ইউনিট কমিটি। বহু বছর ধরে এ পর্যায়ে সম্মেলন হয়নি।

এরআগে ২০ ও ২১ জুন দু’দিন ব্যাপী সভায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সংগঠনকে গতিশীল করতে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন শেষে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন নভেম্বরের মধ্যে করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

তখন সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের মধ্যে ইউনিট ও ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করা এবং নভেম্বর মাসে থানা সম্মেলন শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরপর দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিডিউল নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরে সম্মেলন করার লক্ষ্য জানিয়েছিলেন হানিফ। তবে এখনো তৃণমূলে সম্মেলন শুরুই হয়নি।

শনিবার সভা শেষে মহানগরের সম্মেলন কবে হবে জানতে চাইলে হানিফ বলেন, “সেটা তো পরে আসবে। সব ওয়ার্ডের সম্মেলন শেষ হওয়ার পরে দলীয় সভানেত্রীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে সম্মেলনের তারিখ ঠিক করা হবে। সে পর্যায় এখনো আসেনি।”

আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের একাধিক ধারা সক্রিয় কিনা জানতে চাইলে হানিফ বলেন, “আওয়ামী লীগের কোনো্ পক্ষ বিপক্ষ নেই। সব এক ধারায় আছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ। দ্বিতীয় কোনো ধারা নেই।”

এর আগে সভার শুরুতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলমান রেখেও সম্মেলন করা যায়। আগের কমিটি হওয়ার পর প্রায় আট বছর হতে চলেছে। ওয়ার্ডের সম্মেলন করতে দেড় মাসের বেশি লাগার কথা নয়।

“উত্তর জেলা আমরা দ্রুত সময়ে সম্মেলন আয়োজন করেছি। নির্ধারিত সময়ে নিয়মিত সম্মেলন হলে সংগঠনে গতিশীলতা বাড়বে।”

বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদের উপস্থিতিতে সভায় দীর্ঘ আলোচনা শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, নভেম্বরে তারা আবার আসবেন। সদস্য সংগ্রহ শেষ করে ১৫ নভেম্বর থেকে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হবে।

সভায় সদস্য সংগ্রহ নিয়েও উপস্থিত নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের কয়েকজন প্রশ্ন তোলেন। প্রতিটি ইউনিটে ১৫০ জন করে একটি ওয়ার্ডে ৪৫০ জন নতুন সদস্য করতে ফরম দেয়া হচ্ছে।

নেতাদের কয়েকজন ৫০ লাখ মানুষের শহরে এরকম কম সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগে সদস্য করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

পরে সদস্য ফরম বেশি সংখ্যায় বিতরণের বিষয় সম্মতি দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে বাছাই শেষেই সদস্য পদ দেয়া হবে। পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও যুবলীগের পদে না থাকলে তাদের সদস্য পদ দেয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করতে নির্দেশনা দেন।

আগামী দিনগুলোতে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলার বিষয়ে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার বিষয়ে সভায় কয়েকজন নেতা বক্তব্য দেন। সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে দলকে চাঙা করার পরামর্শ দেন তারা।

 সভায় নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন সাংগঠনিক বিষয় তুলে ধরেন।

সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, নগর কমিটির সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, মেয়র ও যুগ্ম সম্পাদক মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।