বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল বন্ধ রাখলে ব্যবস্থা: সম্প্রচারমন্ত্রী

জনগণকে ক্ষুব্ধ করতে কেউ বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে আসা বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ রাখলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2021, 02:15 PM
Updated : 2 Oct 2021, 02:43 PM

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যেসমস্ত চ্যানেল বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে দেশে আসে, সেগুলো সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। আইন মানা বিদেশি চ্যানেলের যেমন দায়িত্ব, একই সঙ্গে যারা বিদেশি চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করে সেই অপারেটরদেরও দায়িত্ব।

“কেউ যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে জনগণকে বিক্ষুব্ধকরার জন্য, বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে আসা চ্যানেল বন্ধ রাখে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, “বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে যেহেতু তারা ফিড দিচ্ছে না তাই এই চ্যানেলগুলোর যারা বাংলাদেশে অপারেটর তারাই সম্প্রচার বন্ধ করেছে।

“আমরা আশা করব বিদেশি চ্যানেলগুলো খুব সহসা বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে বাংলাদেশে ফিড পাঠাবে। তাহলে এখানে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না।”

বিবিসি, সিএনএনসহ বহু চ্যানেল বিজ্ঞাপনবিহীনভাবে বাংলাদেশে প্রদর্শিত হচ্ছে জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের আকাশ উম্মুক্ত, এখানে যেকোনো বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারে।

“কিন্তু অবশ্যই সেটি বাংলাদেশের আইন মেনে করতে হবে। বাংলাদেশের আইনানুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে কোনো বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না।

“একই আইন ইউরোপ আমেরিকা, ভারত, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাসহ উপমহাদেশের অন্য দেশগুলোতে আছে। সেই আইন মেনেই সেখানে ভিনদেশি চ্যানেলগুলোকে সম্প্রচার করতে হয়।”

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে বছরের পর বছর ধরে আমাদের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিদেশি চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনসহ সম্প্রচার করছিল। আমরা বহুবার তাগাদা দিয়েছি।

“শেষ পর্যন্ত আমরা বিদেশি চ্যানেলের যারা এখানে প্রতিনিধি, কেবল অপারেটরদের সাথে, টেলিভিশন মালিকদের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম পহেলা অক্টোবর থেকে আমরা আইন কার্যকর করব।”

সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিজ্ঞাপনসহ চালানোর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে প্রায় দু’হাজার কোটি টাকার মত ইনভেস্টমেন্ট প্রতিবছর হয় না।

“সেটি থেকে দেশ বঞ্চিত হয়, মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি বঞ্চিত হয়, সাংবাদিকরাও বঞ্চিত হয়। সেই কারণে আমরা যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি সেটিকে টিলিভিশন মালিকদের সংগঠন, সম্প্রচার জার্নালিস্ট ফোরামসহ সকলে অভিনন্দন জানিয়েছে।”

ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্ম বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অডিও-ভিডিওসহ বিভিন্ন কন্টেন্ট প্রচার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য আমরা নীতিমালা করছি, নীতিমালা খুব সহসা চুড়ান্ত হবে।

“সেই নীতিমালা যখন জারি হবে তখন সেই নীতিমালার যারা ব্যত্যয় ঘটাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

‘প্রবাসী কমিউনিটি-সংযুক্ত আরব আমিরাত’ আয়োজিত এই আলোচনাসভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদ আবুধাবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইফতেখার হোসেন বাবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, সহ-সভাপতি ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, চট্টগ্রাম প্রবাসী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম এ ছালাম।

আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী কমিউনিটি নেতা আবদুল মোতালেব, জামসেদুল আলম, শফিউল আলম, সেলিম আনছারি ও জমির হোসেন জমির প্রমুখ।