নিজাম পাশা খুন হলেও তার মোবাইল ফোনটি ছিল সচল, তা থেকে যে দারোয়ান কথা বলেছিলেন, সেই সূত্র ধরে খোঁজাখুঁজির পর মেলে নিজামের লাশ। তবে সেই দারোয়ান এখনও পলাতক।
Published : 27 Sep 2021, 07:34 PM
খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসাইন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিজাম পাশাকে খুন করে লাশটি ময়লা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।
এ ঘটনায় নিজামের স্ত্রী সেলিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে ভবনের দারোয়ান মো. হাছানকে আসামি করে মামলা করেছেন।
ফটিকছড়ির বাসিন্দা নিজাম প্রতি সপ্তাহে নিজের ভবনের কাজের অগ্রগতি দেখতে এবং শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে শহরে যেতেন। রোববার ভোরেও গিয়েছিলেন।
মামলায় সেলিনা বলেন, রাত ১০টা ৩৯ মিনিটে দারোয়ান হাছান তার স্বামীর মোবাইল থেকে তার মেয়েকে (নিজামের মেয়ে) ফোন করে জানান যে নিজাম ভবনে আসেননি। ‘লোক দিয়ে’ নির্মাণ সামগ্রী পাঠিয়েছেন। এজন্য ২০ হাজার টাকা পাঠাতে হবে।
কিন্তু মোবাইল ফোন তাহলে তার হাতে কেন- নিজামের মেয়ের এই প্রশ্নে হাছান বলেছিলেন, সেটিও ‘লোক মারফত’ তার কাছে পাঠানো হয়।
হাছানের কথাবার্তায় সন্দেহ জাগে নিজামের মেয়ের। নিজামের স্ত্রী ও স্বজনরা রাতেই ফটিকছড়ি থেকে চট্টগ্রামে রওনা হয়ে রাত ২টার দিকে নির্মাণাধীন ভবনে পৌঁছায়।
বিভিন্ন দিকে খোঁজাখুঁজির পর নিজামকে না পেয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে তারা দ্বারস্ত হয় পুলিশের। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে আশেপাশে খোঁজাখুঁজির পর নিজামের নির্মাণাধীন ভবন সংলগ্ন একটি স্থানে আবর্জনার স্তূপ থেকে হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।
খুলশী থানার ওসি মো. শাহীনুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিজাম পাশার পরনের লুঙ্গি দিয়ে তার পা এবং চিকন তার দিয়ে হাত বাঁধা ছিল।
খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফতাব হোসাইন বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে তত্ত্বাবধায়কের (হাছানের) থাকার ঘরে নিজামকে খুন করে লাশ বাইরে এনে আবর্জনা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল।”
নিজামের স্বজনরা এসে আর দারোয়ান হাছানকে খুঁজে পায়নি। নিজামের মোবাইল সেটটিও পাওয়া যায়নি বলে জানান ওসি।
দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে এসে ২০১৯ সালে জমির হাউজিং সোসাইটির ভিআইপি কাঁচা সড়কে নিজের মালিকানাধীন জায়গায় সাততলা ভবন নির্মাণ শুরু করেন নিজাম।
নিজামকে হত্যার কারণের বিষয়ে সেলিনা বলেন, ভবনের নির্মাণ কাজ শুরুর সময় সেখানে হাছানকে দারোয়ানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু হাছান নির্মাণকাজে তার পছন্দের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নিজাম পাশাকে বিভিন্ন সময়ে চাপ দিচ্ছিলেন। এনিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় সম্প্রতি তিনি হাছানকে আর কাজে রাখবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছিলন। তাতে ক্ষিপ্ত হন হাছান।