‘রাজপথের অগ্নিপুরুষ ছিলেন পুলিন দে’

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের যোদ্ধা আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রয়াত অধ্যাপক পুলিন দে এখনও রাজপথের নেতাকর্মীদের প্রেরণা বলে অভিহিত করেছেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতারা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2021, 12:44 PM
Updated : 18 Sept 2021, 12:44 PM

শনিবার দারুল ফজল মার্কেটে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে প্রয়াত এই নেতার স্মরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেছেন নেতারা।

ব্রিটিশ বিরোধী লড়াই-সংগ্রামে মাস্টারদা সূর্য সেনের সহযোদ্ধা অধ্যাপক পুলিন দে এর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ১১ অক্টোবর।

স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ অধ্যাপক পুলিন দে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড পরবর্তী সময়ে আমাদের মাঝে সাহসী প্রেরণাদাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। অন্তর থেকে তিনি সমাজবাদী ও বিপ্লবী।

“তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমৃত্যু ধারণ করে গেছেন এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহায় শুধু সাহসী যোদ্ধা নন, রাজপথের আন্দোলনে ছিলেন পুরোভাগে।”

সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “তিনি একজন বড় মাপের নেতাই শুধু নন, কিংবদন্তী তুল্য অগ্নিপুরুষ।

“এই অকৃতদার মহামানব ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী একজন কর্মীবান্ধব জননেতা। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন তিনি রাজপথেই ছিলেন। যারা রাজপথে আছি ও থাকব তারাই পুলিন দে এর যোগ্য উত্তরসূরী।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল কুমার সরকার, খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উপদেষ্টা শেখ মোহাম্মদ ইছহাক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান মাহমুদ শমসের, শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, জহুর আহমদ, মোহাম্মদ হোসেন, আব্দুল আহাদ, আবু তাহের, শহিদুল আলম প্রমুখ।

বিপ্লবী পুলিন দে এর জন্ম ১৯১৪ সালের ১ অক্টোবর পটিয়ার ধলঘাটে। বাবা সারদা কুমার দে ও মা সাবিত্রী দেবী।

১৯৩৫ সালে হিজলী বন্দিনিবাস থেকে আাইএ, রংপুর জেল থেকে ১৯৩৭ সালে বিএ এবং প্রেসিডেন্সি জেল থেকে পরীক্ষা দিয়ে ১৯৪৪ সালে এমএ পাস করেন তিনি।

মাস্টারদা সূর্য সেনের ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সদস্য পুলিন দে ধলঘাট যুদ্ধে অংশ নেন। পরে ১৯৩২ সালে কারাবরণ করে মুক্তি পান ১৯৩৮ সালে।

১৯৩৯ সালে যোগ দেন জয় প্রকাশ নারায়ণের সমাজতন্ত্রী দলে। ১৯৪২ সালে ভারত রক্ষা আইনে আবার গ্রেপ্তার হন।

১৯৪৭ এর পর অল পাকিস্তান সোসালিস্ট পার্টির যুগ্ম সম্পাদক এবং পূর্ব-পাকিস্তানের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫০ সালে ঢাকা সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।

ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় পুলিন দে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে মিরসরাই, ফেনী, নোয়াখালী আসন থেকে এমএনএ নির্বাচিত হন। যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভায়ও যোগ দেন।

পরবর্তীতে সামরিক আইন জারি হলে ধলঘাটে নিজগৃহে অন্তরীণ হন। সেসময় ধলঘাট হাই স্কুলে যোগ দেন প্রধান শিক্ষক হিসেবে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময় অবার গ্রেপ্তার হন। মুক্তি পান এক বছর পর। ২০০০ সালের ১১ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।