ডিসেম্বরের আগে চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে সম্মেলন

নিজের বলয় ভারী করতে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য যদি কেউ দুয়ার খুলে দেয় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে হুশিয়ার করেছেন নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2021, 04:21 PM
Updated : 31 August 2021, 04:21 PM

মঙ্গলবার বিকেলে দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ হুশিয়ারি দেন।

নির্বাহী পরিষদের এই সভায় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগেই ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে নগর কমিটির প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রাতে জানানো হয়।

এরআগে গত ২০ ও ২১ জুন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সংগঠনকে গতিশীল করতে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন শেষে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন ডিসেম্বরের মধ্যে করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

চট্টগ্রাম নগর কমিটির অধীনে ৪৩টি সাংগঠনিক ওয়ার্ড ও ১৫টি থানা কমিটি আছে। বহু বছর ধরে এই পর্যায়ে সম্মেলন বা কমিটি গঠন হয়নি।

মঙ্গলবার সভায় প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে সম্মেলনের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “অনেক প্রতিকূলতা ও বিপর্যয় পেড়িয়ে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ নিজের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করেছে। আমরা অনেক সংকট মোকাবেলা করে যে অবস্থানে আছি তা যেন আত্মকলহ ও বিবাদে বিলীন না হয়।

“কোন ওয়ার্ডে কোন বিতর্কিত ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়ে থাকলে তারা সদস্য পদ পাবে না। এ ধরনের কর্মকান্ড যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে স্থানীয় নেতৃত্বকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। নিজের বলয় ভারী করতে অনুপ্রবেশকারীদের জন্য যদি কেউ দুয়ার খুলে দেয় তাদের বিরুদ্ধে ও কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

২০-২১ জুন সার্কিচ হাউজে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে দুই দিনব্যাপী সভা করে। ওই সভা শেষে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূলকে সংগঠিত করতে পাঁচটি নির্দেশনা দেয় দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

সেদিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ গণমাধ্যমকে জানান, জুনের শেষ পর্যায়ে ও জুলাইয়ে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর এই দুই মাসের মধ্যে আমাদের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলন করে ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করতে চাই। নভেম্বর মাসে থানা পর্যায়ের সম্মেলন শেষ করতে চাই।

“ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষ করার পরে সকল প্রস্তুতি শেষ হলে পরে দলের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে একটা শিডিউল নিয়ে আমরা চট্টগ্রাম মহানগরে সম্মেলন করব।”

নতুন সদস্য সংগ্রহের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে হানিফ বলেছিলেন, “যার বিরুদ্ধে কোনো অনৈতিকতার অভিযোগ নেই, যার সঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের কোনো অভিযোগ বা সম্পৃক্ততা নেই, শিক্ষিত, সজ্জন, সমাজে এরকম গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়ে যোগদান করানো যেতে পারে। একজনের ইচ্ছে হল কাউকে এনে যোগদান করালাম সেটার কোনো সুযোগ নেই।”

পাশাপাশি গত সিটি নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহী হিসেবে ভোটে লড়েছেন তাদের কমিটিতে ঠাঁই না দেয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানান হানিফ।

মঙ্গলবারের সভায় নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “আওয়ামী লীগ জনগনের দল। তাই দলের গণভিত্তিই হলো আমাদের মূল শক্তি। এই শক্তিকে অধিকতর সুসংহত করতে হলে নিজেদের মধ্যেই আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে যা সত্য এবং অনিবার্য তাকে মেনে নেওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।

“সদস্য অন্তর্ভূক্তি ও নবায়নে যারা ইতোপূর্বে বই নিয়েছিলেন সে সকল বইগুলোর মুন্ডা আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের কার্যালয়ে অবশ্যই জমা দিতে হবে। অন্যথায় যারা বই ও মুন্ডা জমা দেবেন না তাদেরকে নতুনভাবে সদস্য গ্রহণ ও নবায়ন বই দেয়া হবে না।”

সভায় আগামী ১১ সেপ্টেম্বর মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় নির্ধারণ হয়।

সভায় বক্তব্য রাখেন নগর কমিটির সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, সুনীল সরকার, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, হাসান শমসের, শেখ ইফতেখার সাইমুন চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, মো. হোসেন, হাজী জহুর আহমদ, জালাল উদ্দিন ইকবাল, জোবায়েরা নার্গিস খান প্রমুখ।