চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) উদ্যোগে নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে করা জিনোম সিকোয়েন্স ও গবেষণায় এ তথ্য মিলেছে।
শুক্রবার সিভাসুর পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গবেষণার এ তথ্য জানানো হয়। গবেষণায় সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর)।
সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে এ গবেষণার অংশ হিসেবে জেলায় আক্রান্ত ৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ১ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে চট্টগ্রামে আক্রান্ত ৩০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার বিসিএসআইআর-এ পাঠানো হয় জিনোম সিকোয়েন্স করার জন্য।
এর মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী। জিনোম সিকোয়েন্স করা নমুনার মধ্যে ১৫টি সিটি কর্পোরেশন এলাকার এবং বাকি ১৫টি বিভিন্ন উপজেলার।
অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, “দেখা গেছে, ৩০টি নমুনার ২৮টি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। অপর একটি আলফা ভেরিয়েন্ট (ইউকে ভেরিয়েন্ট)। জিনোম সিকোয়েন্স করা নমুনার মধ্যে ৯৩ শতাংশই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট।”
এর আগে চট্টগ্রাম জেলা থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের মাধ্যমে করা জিনোম সিকোয়েন্সে আলফা ও বেটা ধরনের আধিক্য মিলেছিল বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
গবেষণা দলে আরও ছিলেন- সিভাসুর শিক্ষক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদিপ দাশ, ডা. প্রানেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক গৌতম বলেন, “এর আগে চট্টগ্রামে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল। কিন্তু তখন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের আধিক্য দেখা যায়নি। সম্প্রতি করা সিকোয়েন্সিংয়ে চট্টগ্রামে ডেল্টার আধিক্য উঠে এসেছে। বলা যায়, চট্টগ্রামে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও এ ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বাড়ছে।”
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত যেসব রোগীর নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে তার মধ্যে ১৫ জনকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
এক দিন আগেই সারা দেশে কোভিডে আক্রান্ত ৩০০ জনের নমুনা থেকে করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে ৯৮ শতাংশের ডেল্টা ধরন পাওয়ার কথা জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) গবেষকরা।
চলতি বছরের ২৯ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্ত করে ওই গবেষণা চালানো হয়।
অন্য অনেক ভাইরাসের মতো নতুন করোনাভাইরাসও ক্রমাগত রূপ বদল করে চলছে। এর মধ্যে গত বছর ভারতে এর যে পরিবর্তিত একটি রূপ শনাক্ত হয়, তা নাম দেওয়া হয় ডেল্টা।
এই ধরন বা ভ্যারিয়েন্টটি (বি.১.৬১৭.২) অতি সংক্রামক হওয়ায় ইতোমধ্যে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণে অসুস্থতার মাত্রাও আগের তুলনায় বেশি হচ্ছে, বিশেষ করে যারা টিকা পায়নি, তাদের ক্ষেত্রে।