দুদক কর্মকর্তার বদলি ঠেকাতে আবেদনকারীকে হাই কোর্টে তলব

চট্টগ্রাম থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের এক কর্মকর্তার বদলি ঠেকাতে রিট আবেদনকারীকে তলব করেছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 August 2021, 12:49 PM
Updated : 5 August 2021, 12:49 PM

আগামী ২৬ আগস্ট ওই ব্যক্তিকে আদালতে হাজির করতে তার আইনজীবীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে বদলির বিষয়ে স্থগিতাদেশ না দেওয়ার পরও অজ্ঞাত এক আইনজীবীর উকিল সনদের বরাত দিয়ে স্থগিতাদেশের সংবাদ প্রকাশের ঘটনা অনুসন্ধান করতে দুদককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিট আবদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আশানূর রহমান ও মাহাদী হাসান।

গত ৩১ জুলাই চট্টগ্রাম শেকে প্রকাশিত দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা ‘হাই কোর্টের আদেশ সেই দুদক কর্মকর্তার বদলির আদেশ স্থগিত’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ করে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাজহারুল হকের দেওয়া উকিল সনদের (ল’ইয়ার সার্টিফিকট) বরাত দিয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, “দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনের বদলির আদেশ স্থগিত করেছেন হাই কোর্ট। একইসঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য তাকে স্বপদে বহাল রাখার আদেশ দেওয়া হয়েছে।”

গত সোমবার বিষয়টি নজরে আসার পর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, তার আদালত থেকে এ ধরনের কোনো আদেশ হয়নি।

পূর্বকোণসহ আঞ্চলিক বেশ কয়েকটি পত্রিকায় এ খবর প্রকাশ করায় উষ্মাও প্রকাশ করেন বিচারক। 

সেদিন তিনি এ খবরের সংশোধনী প্রকাশ এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য দুদকের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন।

পরদিনই অর্থাৎ মঙ্গলবার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে জানান, পূর্বকোণ পত্রিকা দুঃখ প্রকাশ করে সংশোধনী ছেপেছে। যে উকিল সনদের বরাত দিয়ে খবরটি ছাপা হয়েছিল, সে উকিল সনদটি জাল বলে সন্দেহ হচ্ছে।

উকিল সনদ জাল হয়ে থাকলে এর দায় রিট আবেদনকারীকে নিতে হবে জানিয়ে বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য রেখেছিলেন বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম।

সে অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুনানির জন্য উঠলে দুদক আইনজীবী আদালতে বলেন, “অন্য যারা নিউজ ছেপেছিল, তারাও দুঃখ প্রকাশ করেছে, ক্ষমা চেয়েছে। যে উকিল সনদের বরাত দিয়ে সংবাদটি ছাপা হয়েছিল, সে উকিল সনদে বিচারপতির নামের বানান ভুল ছিল। সুপ্রিম কোর্টের কোনো উকিল এ ভুল করতে পারেন না। তবে আইনজীবী মাজহারুল হক জানিয়েছেন, তিনি এ সনদ দেননি। তাই এটি জাল মনে হচ্ছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার।”

তখন বিচারক বলেন, “রিট করেছেন কক্সবাজারের চকরিয়ার একটি মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি। কিন্তু ঠিকানা দেখছি মতিঝিলের। বিষয়টি সন্দেহজনক।”

এক পর্যায়ে দুদকের আইনজীবী বলেন, দুদক তার কোনো কর্মকর্তাকে কোথায় বদলি করবে এটা তাদের নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যাপার। এখানে জনস্বার্থে রিট হবে কীভাবে?

এরপর আদালত রিট আবেদনকারীকে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি অজ্ঞাত উকিল সনদ ও মিথ্যা খবর প্রকাশের পেছনে কারা জড়িত তা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়।