ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় নিয়ে ৩ সিদ্ধান্ত জানালেন চট্টগ্রামের মেয়র

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় রক্ষা ও জানমালের সুরক্ষায় তিন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2021, 05:00 PM
Updated : 30 July 2021, 05:00 PM

শুক্রবার বিকালে নগরীর লালখান বাজার, শাহ্ গরীব উল্লাহ হাউজিং ও কুসুমবাগ হাউজিং সোসাইটিতে ভারী বর্ষণে ধসে পড়া পাহাড়ি এলাকা পরিদর্শনকালে এই বিষয়ে কথা বলেন মেয়র।

বন্দর নগরীতে গত চারদিন ধরে টানা ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এতে বৃহস্পতিবার নগরীর গরীব উল্লাহ শাহ হাউজিং সংলগ্ন আমান উল্লাহ হাউজিং, আমিন কলোনি, আমবাগান, বায়েজিদ লিংক রোড, বায়তুল আমান, বার্মা হাজির পাহাড়সহ বেশ কয়েকটি স্থানে পাহাড় ধসে পড়ে।

এসব ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ২০০৭ সাল থেকে নগরীতে প্রায় প্রতি বছর পাহাড় ধসে মোট প্রাণহানি তিনশ ছাড়িয়েছে।

শুক্রবার পরিদর্শনে গিয়ে সিটি মেয়র বলেন, “এবার পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটলেও বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানি ঘটেনি। তবে যে কোনো সময়ে বড় ধরনের বিপর্যয়ে আশংকা রয়েছে। নিকট অতীতে ভারী বর্ষায় টাইগারপাসে বড় ধরনের ধসে অগুনিত প্রাণহানি ঘটেছে।

“চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়গুলো বালিয়ারী। পাহাড়ের গাছপালা নিধন এবং লাগামহীন পাহাড়ের ভূমি কর্তনের ফলে এগুলো অরক্ষিত ও নড়বড়ে প্রায়। ভারী বর্ষায় অব্যাহত ঢলে প্রতিনিয়ত ভেঙে পড়ে। পাহাড় প্রকৃতিরই সম্পদ। তাকে লালনপালন ও ধারণ করতে পারিনি বলেই বারবার একই ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি ঘটছে।”

এসময় তিনি পাহাড় ধস রোধে নগরীর সব পাহাড় ঘেষে পরিকল্পিত রিটানিং দেয়াল নির্মাণের প্রস্তাব করেন।

এমন দেয়াল ছাড়া কোনো পাহাড়ের আশেপাশে কোনো ধরনের স্থাপনার নকশা অনুমোদন না করতে সিডিএর প্রতি অনুরোধ করেন মেয়র।

তিনি বলেন, “এতে পাহাড়ের সুরক্ষা হবে এবং অতিবৃষ্টিতে পাহাড় থেকে মাটি নেমে খাল-নালা-নদর্মা ভরাট হওয়া বন্ধ হবে। প্রশাসনসহ নগর উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে পরিবেশ ও পহাড় সুরক্ষায় সব ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”

মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পরিদর্শনের সময় মেয়র মহোদয় পরিবেশ অধিদপ্তর পরিচালককে ব্যক্তিগত পাহাড়ের সুরক্ষা দেয়াল না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেও বলেছেন। 

“এছাড়া নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়গুলোতে সুরক্ষা দেয়াল দিতে সিটি করপোরেশন একটি প্রকল্প নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।”

পরিদর্শনে মেয়র রেজাউল বলেন, “মৃত্যুভয়কে পরোয়া না করে যারা পাহাড়ের গায়ে বা পাদদেশে বসতি গড়েছেন, জনস্বার্থে ও জানমাল রক্ষার স্বার্থেই এসব গুড়িয়ে দেওয়া হবে।”

এই বিষয়ে পদক্ষেপ কিভাবে নেওয়া হবে জানতে চাইলে মেয়রের একান্ত সচিব বলেন, “পাহাড় কেটে বসতি ও স্থাপনা নির্মাণকারী ভূমিদস্যু ও প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র মহোদয়।” 

পরিদর্শনকালে মেয়রের সঙ্গে ছিলেন সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর আবুল হাসনাত মো. বেলাল, সিসিসি সচিব খালেদ মাহমুদ, অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।

আরও পড়ুন