ভারি বর্ষণে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা

লঘুচাপ ও মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে চট্টগ্রামে ভারি বর্ষণের পর পাহাড় ধসের আশঙ্কায় পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিচ্ছে প্রশাসন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 July 2021, 11:40 AM
Updated : 28 July 2021, 11:48 AM

বুধবার বেলা ৩টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসে আগের ২৪ ঘন্টায় ৯৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টাও ভারি বর্ষণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী।

সোমবার রাত থেকে নগরীতে বৃষ্টি শুরু হয়। মঙ্গলবার দিনভর থেমে থেমে বৃষ্টি হয়; রাতেও ভারি বর্ষণ হয়।

বুধবার দিনভর টানা বৃষ্টিতে নগরীতে লোকজন ও যানবাহন চলাচল একদম কমে যায়। লকডাউনের মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া পথচারীরা হেঁটেই গন্তব্যে রওনা হন। অন্যদিনের তুলনায় রিকশাও ছিল কম।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ হিসেবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।

পাশাপাশি মৌসুমী বায়ুর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে।

চৌধুরী বলেন, লঘুচাপ ও মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় চট্টগ্রামে অন্তত আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারি বর্ষণ হতে পারে। পাশাপাশি পাহাড়র ধসের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সংকেত আছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বার্তায় বলা হয়, অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমি ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। 

এদিকে তিন ধরে বৃষ্টি চলতে থাকায় নগরীর বাটালি হিল, মতিঝর্ণা, আকবরশাহ, হিল-১, হিল -২, বায়েজিদ লিংক রোডসহ পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার রাত থেকে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ কাজ শুরু করে।

বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৯২টি পরিবারের প্রায় ৩১০ জন মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনা হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আশ্র‍য়কেন্দ্রে আনা পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দুপুরে ও রাতের খাবারের ব্যাবস্থাও করা হয়েছে। মাইকিং চলমান আছে। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনার কাজ এখনো অব্যাহত আছে।

কাট্টলীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এনামুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গতরাত ১১টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত ফিরোজ শাহ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে লোকজন সরিয়ে নিয়েছি। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ত্রাণ দেয়া হবে।