বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড আবার খুলছে

পাহাড় ধসের শঙ্কায় বন্ধ হওয়া বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডে যান চলাচল মঙ্গলবার থেকে আবার শুরু হতে যাচ্ছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2021, 03:55 PM
Updated : 14 June 2021, 03:56 PM

গত বুধবার ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ করেছিল সড়কটির নির্মাণকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। তখন তারা জানিয়েছিল, তিন মাস সড়কটি বন্ধ থাকবে।

কিন্তু সড়কটি বন্ধ থাকায় নগরীর বিভিন্ন অংশে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে তা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রামের সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বিষয়ক এক সভায় সিডিএ ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট অংশ থেকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী অংশকে যুক্ত করে এই লিংক রোড। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন না হলেও গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে সড়কটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

এই সড়কটির কাজ শেষে পুরোপুরি চালু হলে কাপ্তাই, রাঙামাটি, হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে আসা যানবাহন নগরীতে প্রবেশ না করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে পারবে।

বর্তমানে ভারী যানবাহন নগরী এড়িয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও সিটি আউটার রিং রোড এ যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করে।

কিন্তু ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নির্মাণে প্রায় ১৮টি পাহাড় কাটা হয়। যার মধ্যে আটটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর। ৬ জুন মৌসুমের প্রথম বৃষ্টির পর সড়কের পাশের কয়েকটি অংশে মাটি ভেঙে পড়লে সড়কটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক চট্টগ্রাম (মেট্রো) ‍নুরুল্লাহ নূরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বৃষ্টি না হলে সড়কটি খুলে দিতে বলেছি। বৃষ্টি বেশি হলে বন্ধ রাখতে বলেছি। সড়ক বন্ধ থাকায় শহরের মানুষের কষ্ট হচ্ছে।

তবে সড়কের যে পাশে পাহাড়, সেই পাশ বন্ধ রাখতে বলেছেন বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম বায়েজিদ লিংক রোড করার সময় খাড়া করে পাহাড় কাটা হয়েছিল। ছবি: সুমন বাবু

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সড়কের ফৌজদারহাট ও বায়েজিদ অংশে অর্থাৎ দুই প্রবেশ পথে উভমুখী লেন খোলা থাকবে। কিন্তু যেখানে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় আছে রাস্তার পাশে সেখানে শুধু একপাশ খোলা থাকবে।

“আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে এভাবে চালু করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ অংশে সড়ক ও ফুটপাত প্রতিবন্ধকতা দিয়ে বন্ধ রাখা হবে, যাতে কেউ চলাচল করতে না পারে। ওই অংশে যেন কোনো গাড়ি বা ব্যক্তি না যায়।”

এর আগে গত সপ্তাহে সড়কটি বন্ধ করার সময় তিনি জানিয়েছিলেন আগামী তিন মাসে সড়কটি বন্ধ রেখে অবশিষ্ট কাজ করা হবে।

সোমবার জানতে চাইলে কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “পাহাড়ের রিটেনশন কাজ আগেই করতে চেয়েছিলাম। কখনও পরিবেশ অধিদপ্তর বলেছে ডিজাইন দেন, কখনও বলেছে বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রতিবেদন দেন। জরিমানাও করেছিল। এর বিরুদ্ধে পরিবেশ আদালতে আপিল করেছি।

“পাহাড় রেখেই আমরা রাস্তার কাজ শেষ করতে চাই। লক্ষ্য ছিল পাহাড় না কেটে রিটেনশন (রক্ষাকারী দেয়াল) করে রাস্তা করব। পরিবেশ অধিদপ্তর ক্ষতিপূরণ করাতেই কাজ বিলম্ব হয়েছে। এখন রাস্তা বন্ধ রাখলে শহরে বিশাল যানজট হচ্ছে। তাই খুলে দিচ্ছি। কাজও চলবে।”

সড়ক তৈরিতে খাড়া ভাবে কাটা পাহাড়গুলোর ঝুঁকি কমাতে আবারও কাটতে চেয়েছিল সিডিএ। এজন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের কাছে গত বছরের শেষ দিকে অনুমতি চেয়েও পায়নি তারা।

পরে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরামর্শে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হয়। যে কমিটি এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি।

ওই সড়কের দু’পাশে এখন আটটি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় আছে বলে জানিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।