পাহাড় ধসের শংকায় চট্টগ্রামে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ শুরু

বর্ষায় পাহাড় ধসের শংকায় চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে প্রশাসন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2021, 08:28 AM
Updated : 14 June 2021, 08:33 AM

সোমবার সকাল ১০টা থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিবেশ অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে এ অভিযান শুরু করেন।

তিনটি অংশে ভাগ হয়ে ছয়জন ম্যাজিস্ট্রেট বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের কাট্টলী, হাটহাজারি ও সীতাকুণ্ড অংশে অভিযান পরিচালনা করছেন।

চান্দগাঁও সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামনুন আহমেদ অনীক, কাট্টরী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ ইনামুল হাসান, হাটহাজারি সার্কেলের সহকারী কমিশনার শরীফ উল্যাহ, পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার এহসান মুরাদ, সীতাকুণ্ড সার্কেলের সহকারী কমিশনার মো. রাশেদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার মাসুমা জান্নাত উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।

অভিযানে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এহসান মুরাদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল থেকেই বায়েজিদ লিংক রোডের উভয় পাশের পাহাড়ের পাদদেশে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছি।”

রোডের বিভিন্ন অংশে ভাগ হয়ে এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাস্তার সাথে লাগানো স্থাপনার সাথে পাহাড়গুলোর ভেতরে যেসব ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে, সেখানেও অভিযান চালানো হচ্ছে।

অভিযানে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ‍পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সহযোগিতা করছেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট অংশ থেকে নগরীর বায়েজিদ পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি নির্মাণে প্রায় ১৮টি পাহাড় কাটা হয়। পাহাড়গুলো খাড়াভাবে কাটায় সেগুলো ধসে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে প্রবল বর্ষণের পর পাহাড় ধসের শঙ্কায় চট্টগ্রামের বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডে যান চলাচল গত বুধবার থেকে তিন মাসের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়।

২০১৬ সালের জুনে ১৭২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার এই লিংক রোড প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুরুতে দুই লেইনের সড়ক করার কথা থাকলেও ২০১৬ সালের অক্টোবরে সড়কটি চার লেইনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। এতে খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৩২০ কোটি টাকা।

২০১৬ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিলেও সে অনুযায়ী কাজ না করে পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করায় ২০১৭ সালে সিডিএকে দুই দফায় নোটিস দেওয়া হয়। জরিমানা করা হয় ১০ লাখ টাকা।

এরপরও পাহাড় কাটা থামেনি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নগরীর উত্তর পাহাড়তলী মৌজা, হাটহাজারীর জালালাবাদ মৌজা এবং সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর মৌজায় প্রায় ১৮টি পাহাড় কাটা হয় বলে অভিযোগ।

গত বছরের ২৯ জানুয়ারি পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে শুনানি শেষে ‘পাহাড় কেটে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, পাহাড়ের উপরিভাগের মাটি ও ভূমির বাইন্ডিং ক্যাপাসিটি নষ্টসহ পরিবেশ-প্রতিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি করায়’ সিডিএকে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অনুমোদনের চেয়ে ৬৯ হাজার ২১৯ দশমিক ৭২০ ঘনফুট বেশি পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছিল অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট বিভাগ।