এ নিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে তাদের অধীনস্থ এ সংগঠনটির বিষয়ে ১০ জুনের মধ্যে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার গঠিত তদন্ত কমিটি চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য পদত্যাগী সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ফিফা রেফারি আব্দুল হান্নান মিরণসহ সাতজনের বক্তব্য গ্রহণ করেছে।
পাশাপাশি অফিস পিয়ন, জুয়ার বোর্ড চালানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ ব্যক্তিদেরও বক্তব্য গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
বাফুফে থেকে বাংলাদেশ ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনকে দেওয়া চিঠিতে চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনে জুয়ার আসর, কার্যালয় সিলগালাসহ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিষয়গুলো নিয়ে ১০ জুনের মধ্যে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে।
বাফুফে থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চট্টগ্রামের বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচারের পর বাংলাদেশ ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে (সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উসৈ শিং) মৌখিকভাবে অবহিত করেছি এবং তিনিও বিষয়টি অবগত ছিলেন। আগামী ৮ জুন আমাদের নির্বাহী কমিটির সভা আছে। সভায় বাফুফের চিঠিসহ করণীয় নিয়ে আলোচন হবে।”
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের দক্ষিণ-পশ্চিম গ্যালারিতে অবস্থিত চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে গত ১ জুন রাতে অভিযান চালিয়ে ১৯ জনকে গ্রেপ্তার ও পৌনে সাত লাখ টাকা জব্দ করে পুলিশ। তারা সেখানে বসে জুয়া খেলছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এর পরপরই ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়টি সিলগালা করে তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)।
এদিকে সিজেকেএস’র তদন্ত কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সদস্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনে তাস খেলার জন্য সীমান্ত সেন নামে একজনের সাথে চুক্তি করেছিলেন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মিরণ। যেটি দেখভাল করতেন সীমান্ত সেনের ভাই অমর কৃষ্ণ সেন। সে চুক্তি অনুযায়ী তারা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনকে দৈনিক সাড়ে চার হাজার টাকা দেবে। এজন্য ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের উন্নয়নের জন্য তাদের কাছ থেকে অগ্রীম তিন লাখ টাকাও নেওয়া হয়েছিল। তবে দেড় বছরের মাথায় দেশজুড়ে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে এ তাস খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
পরবর্তীতে রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান মিরণ নিজেই জুয়ার আসর চালাতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে মিরণ তদন্ত কমিটির কাছে তা অস্বীকার করেছেন বলে কমিটির ওই সদস্য জানান।
পুলিশি অভিযানের পর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন ২০০৯ সাল থেকে টানা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসা মিরণ।
তদন্ত কমিটির প্রধান ও সিজেকেএস’র সহ-সভাপতি হাফিজুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্তের স্বার্থে যাদের সাথে কথা বলা প্রয়োজন সবার সাথে আমরা কথা বলেছি। আব্দুল হান্নান মিরণসহ সাতজনের বক্তব্য লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য গ্রহণ করেছি।”
প্রাথমিক তদন্তে কী পেয়েছে তদন্ত কমিটি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “দোষী কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলোর ‘ফাইন্ডিংস’ আমরা প্রতিবেদনে তুলে ধরব। পাশাপাশি কিছু সুপারিশও করব।”
আগামী দুই দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার আশা প্রকাশ করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান।