খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়া প্রয়োজন কিনা, সেটাই প্রশ্ন: তথ্যমন্ত্রী

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে তার পরিবার ও বিএনপি চাইলেও তার আদৌ প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 12:17 PM
Updated : 8 May 2021, 12:18 PM

তিনি বলেছেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে আদৌ বিদেশ নিয়ে যাবার প্রয়োজন আছে কি না, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন? বিএনপি কেন যে উনাকে বিদেশ নিয়ে যেতে চায়, সেটি বোধগম্য নয়। কারণ দেশেই তো বেগম খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছেন।”

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তা ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ ধরে সেখানে সিসিইউতে রয়েছেন তিনি।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি নিয়ে এক বছর ধরে বাড়িতে থাকার মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হন।

তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে কয়েকদিন আগেই সরকারের অনুমতি চেয়েছেন তার ভাই। সরকার তা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে বলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গ তুলে আরও বলেন, “দেশের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বেগম খালেদা জিয়া আমার কাছে একজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তিনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক, এটিই মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা।”

খালেদা জিয়া যাতে দেশে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা পান, তা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়াও ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, “বিএনপি সমগ্র দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে মেটেও উদ্বিগ্ন নয়, এনিয়ে তাদের কোনো চিন্তা নাই। তাদের সমস্ত চিন্তা এখন কেন্দ্রীভূত বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে।

“আপনাদের চিন্তাটা শুধু বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মধ্যে নিমগ্ন না রেখে জনগণের পাশে দাঁড়ান। যেভাবে মানুষের দোড়গোড়ায় আওয়ামী লীগ খাদ্য সহায়তাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী দিচ্ছে, সেভাবে আপনারাও মাঠে এসে জনগণের কাছে বিতরণ করুন।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকার ঠিকভাবেই কাজ করছে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আজকের পরিস্থিতি হচ্ছে করোনার জন্য যে ১২ হাজারেরও বেশি বেড রয়েছে, তার ৭০ ভাগ বেড খালি আছে, অনেক আইসিইউ বেডও খালি আছে।

“করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপগুলো অত্যন্ত সফলভাবে কাজ করেছে। কিন্তু সমালোচকদের সমালোচনা থেমে নেই।”

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন হাছান মাহমুদ।

রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “আমাদের এই দেশে সমস্ত দুর্যোগ-দুর্বিপাকে রেড ক্রিসেন্টের অকুতোভয় সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়েছেন।” করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে ত্রাণ বিতরণসহ টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, তারও প্রশংসা করেন মন্ত্রী।

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা ও সিটি ইউনিট যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানে মহামারীকালে ভূমিকা রাখা কর্মীদের সংবর্ধনা দেয়। 

রেড ক্রিসেন্ট চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ শফিউল আজমের সভাপতিত্বে ও যুব রেড ক্রিসেন্টের যুব প্রধান গাজী ইফতেখার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী, সংবর্ধিত অতিথি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নবনিযুক্ত ট্রেজারার এম এ ছালাম, জেলা ইউনিটের সেক্রেটারি মো. আসলাম খাঁন, সিটি ইউনিটের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার।