রুবেল হোসেন (২৮) নামে এক বর্গাচাষিকে হত্যার অভিযোগে বুধবার গাজীপুর থেকে সোহরাব হোসেন ওরফে বলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করা হয়।
সোহরাব খুনের কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা জানিয়েছেন।
নিহত রুবেলের বাড়ি নীলফামারীতে আর সোহরাবের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায়। দুই বছর আগে তারা দুজনই চট্টগ্রামের হালিশহর চৌচালা এলাকায় বর্গা চাষি হিসেবে কাজ করতেন।
গত বছরের ২ মার্চ হালিশহর থানার চৌচালা এলাকায় ওয়াসার পাইপ লাইন প্রকল্পের সীমানা পিলার তৈরির সময় খোড়া গর্তে একটি কঙ্কাল দেখে পুলিশকে খবর দেয় শ্রমিকরা।
লাশ উদ্ধারের পর ডিএনএ পরীক্ষা করে পুলিশ লাশটি রুবেলের বলে শনাক্ত করে।
তার আগে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে রুবেলের খোঁজ না পেয়ে কয়েকদিন পর ২৮ নভেম্বর হালিশহর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন তার বড় ভাই মামুনুল ইসলাম। তিনি ভাইয়ের সন্ধানে নীলফামারী থেকে এসেছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ জানান, রুবেলের পরিচয় জানার পর তদন্তে তার বন্ধু সোহরাবের উপর সন্দেহ তৈরি হয়। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পরপরই সোহরাব বগুড়া চলে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে চরাঞ্চলে বর্গা চাষ শুরু করেন। পুলিশ তার খোঁজ শুরু করেছে সেটা বুঝতে পেরে বগুড়া ছেড়ে গাজীপুরের কালিয়াকৈর গিয়ে গরু পালনের কাজ নিয়েছিলেন।
পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধে সোহরাব দা দিয়ে রুবেলকে হত্যা করে লাশ মাটির নিচে গর্ত করে পুঁতে ফেলার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, রুবেল বর্গা চাষের পাশাপাশি সুদে টাকা ধার দিত। সোহরাবও তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল।
“সোহবার নিজের এবং আরও কয়েকজনের জন্য হাজারে ১০০ টাকা সুদে ২৮ হাজার ধার নিয়েছিল রুবেলের কাছ থেকে। কিছুদিন পর রুবেল ২৮ হাজার টাকা একসাথে ফেরৎ চাইলে সোহরাবের সাথে তার ঝগড়া শুরু হয়।
“ঝগড়ার এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় ওয়াসার সীমানা প্রাচীর সংলগ্ন জমিতে সোহরাব দা দিয়ে রুবেলকে আঘাত করলে সে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। সে মারা গেলে সোহরাব লাশটি গর্ত করে পুঁতে ফেলে।”
তখন রুবেলের মোবাইল ফোনটিও সোহরাব নিয়ে তিন হাজার টাকায় তা বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পিবিআই।