চট্টগ্রামে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ব্রিটিশ ও আফ্রিকান ধরনের আধিক্য: সিভাসু

দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের যুক্তরাজ্য ও দক্ষিণ আফ্রিকার ধরনের আধিক্য ছিল বলে মনে করছেন গবেষকরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2021, 07:04 PM
Updated : 3 May 2021, 07:24 PM

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সাইয়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিভাসু) এক গবেষণার অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনা থেকে জীবন রহস্য উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্স) করে এমন অনুমানের কথা বলছেন তারা।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় গত ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ১০ জন ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করে জিনোম সিকোয়েন্স করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির গবেষকরা।

তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও অধিক সংখ্যক আক্রান্ত রোগীর নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা দরকার বলে জানান গবেষক দলের প্রধান ও সিভাসু’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ।

গবেষণা দলে আরো ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক পরিতোষ কুমার বিশ্বাস ও অধ্যাপক শারমিন চৌধুরী।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোরশেদ হাসান সরকার ও গবেষক মো. সেলিম খান এতে সহযোগিতা করেন।

গবেষণায় সহযোগী হিসেবে ছিলেন ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদিব দাশ, ডা. প্রণেশ দত্ত, ডা. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমেদ নিজামী।

অধ্যাপক গৌতম বুদ্ধ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে তাদের চলমান গবেষণার অংশ হিসেবে জিনেমা সিকোয়েন্স পরীক্ষা করা হয়।

“ওই গবেষণার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ঢেউয়ে কোন ধরণের করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে তা জানার চেষ্টার অংশ হিসেবে আটটি নমুনার জীবন রহস্য উন্মোচন করেছি।“

তিনি বলেন, রেনডম সেম্পল হিসেবে সিভাসু ল্যাবে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়া ১০টি নমুনা নেওয়া হয়।

“এর মধ্যে ছয়টিতে ইউকে ভ্যারিয়েন্ট (B.1.1.7) এর উপস্থিতি মিলেছে। তিনটির সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার ধরন (B.1.351) এবং অপরটিতে অস্ট্রেলিয়ার ধরন মিলেছে। তবে কোনো নমুনার সঙ্গে ভারতীয় ধরন (B.1.617) পাওয়া যায়নি।’’

সিভাসুর উপাচার্য বলেন, আরও বেশি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সের পর এসব বিষয়ে অধিক তথ্য মিলবে।

এ বছরের মধ্য মার্চ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ্য করা গেছে। চট্টগ্রামেও এ সময়ে সংক্রমণ অনেক বেশি ছিল।

গবেষণার তথ্যে দেখা গেছে, আক্রান্ত যেসব রোগীর নমুনা নেওয়া হয় তাদের মধ্য পাঁচজনকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। এদের মধ্যে ব্রিটেনের ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত তিনজন ছিলেন। বাকি দুজনের মধ্যে একজন দক্ষিণ আফ্রিকা ও অপরজন অস্ট্রেলিয়া ধরনের আক্রান্ত।

সিভাসু বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুর সময় থেকে ল্যাব স্থাপন করে সংক্রমণ শনাক্তে কাজ করছে। তারা বিভিন্ন সময়ে জিনোম সিকোয়েন্সিং ছাড়াও আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে গবেষণাও করছে।

সম্প্রতি করোনার টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ২০০ জনের ওপর এক গবেষণায় চালায়। এতে টিকা নেয়া ব্যক্তিরা আক্রান্ত হলেও তারা কম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বলে উঠে আসে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল করোনাভাইরাসের প্রথম ঢেউ চলাকালীন সময়ে আটটি নমুনা থেকে জিনোম সিকোয়েন্স করেছিল।