হেফাজতের তাণ্ডব: চট্টগ্রামে সাত মামলায় হাজারের বেশি আসামি

চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে হেফাজতি তাণ্ডব ও পটিয়া থানায় হামলার ঘটনায় সাতটি মামলা হয়েছে, যেগুলোতে সহস্রাধিক মানুষকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2021, 10:47 AM
Updated : 31 March 2021, 10:47 AM

হাটহাজারি ও পটিয়া থানায় মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে এসব মামলা করা হয়।

এর মধ্যে হাটহাজারি থানায় ছয়টি ও পটিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।

হেফাজতের হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর হাটহাজারি উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “হাটহাজারি থানায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ চারটি মামলা করেছে। আর উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে দুইটি মামলা করা হয়েছে।

“পাশাপাশি পটিয়া থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে।”

পটিয়া থানার মামলায় অজ্ঞাত সাত থেকে আটশ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি রেজাউল করিম মজুমদার।

আর হাটহাজারির ছয় মামলায় অজ্ঞাত পাঁচ শতাধিক লোককে আসামি করা হয়েছে।

হেফাজতের হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর হাটহাজারি উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর দিনে শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতায় হাটহাজারিতে বিক্ষোভ মিছিল করে কওমী মাদ্রাসা ভিত্তিক সংগঠন হেফাজত ইসলাম।

হাটহাজারি বড় মাদ্রাসা নামে পরিচিত দারুল উলুম ময়নুল ইসলাম মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া এ মিছিল থেকে হামলা চালানো হয় হাটহাজারি থানায়।

পাশাপাশি হেফাজত ইসলাম কর্মীরা হাটহাজারি উপজেলা ভূমি অফিস ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। সংঘাতের সময় গুলিতে নিহত হয় চারজন।

আর পটিয়া মাদ্রাসা থেকে বের হওয়া মিছিল থেকে হামলা চালানো হয়েছিল পটিয়া থানায়।

ভূমি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ

হেফাজতের হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর হাটহাজারি উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস

হেফাজত ইসলামের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হাটহাজারি সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

হেফাজতের দেওয়া আগুনে সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বিভিন্ন নথিপত্র পুড়ে যাওয়ায় স্থানীয় জনগণও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ উল্যাহ।

তিনি বলেন, তার কার্যালয়ে হামলার পাশাপাশি সরকারি গাড়িতেও আগুন লাগানো হয়েছে। যেটা পুরোপুরি ভষ্মীভূত হয়েছে।

“সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের রেকর্ড রুমে ভাঙচুর করা হয়েছে। সেখানে থাকা বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলপত্র জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে খাস জমির রেজিস্ট্রার, খাজনা বই, খতিয়ানসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র আছে।”

হেফাজতের হামলা ও অগ্নিসংযোগের পর হাটহাজারি উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস

হাটহাজারি সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় পাশাপাশি। সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অধীনে রয়েছে ফতেপুর, মেখল ইউনিয়ন ও পৌরসভার আওতাধীন ১৭টি মৌজা।

সহকারী কমিশনার শরীফ বলেন, “যেসব নথিপত্র জ্বালিয়ে দেওয়া সেগুলোর কিছু নতুন করে সংগ্রহ করা গেলেও কিছু কিছু নথিপত্র আর সংগ্রহ করা যাবে না। যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ।”

তিনি জানান, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা তার ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তার নিরুপণ চলছে।