চট্টগ্রাম সিটির কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম মিন্টুর মৃত্যু

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম পৌরসভার সাতবারের কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম মিন্টু মারা গেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 March 2021, 08:39 AM
Updated : 18 March 2021, 08:39 AM

বৃহস্পতিবার ভোর সোয়া ৫টার দিকে ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী জানান।

৬৯ বছর বয়সী মিন্টু নগরীর ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসে সংক্রমণসহ বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছিল।

এদিকে মিন্টুর মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) প্যানেল মেয়র নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে সিসিসির সম্মেলন কক্ষে এ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল, যাতে মিন্টুও প্রার্থী ছিলেন।

জহরলাল হাজারী বলেন, “মিন্টু ভাই সাতবার কাউন্সিলর হলেও তার তেমন কিছু ছিল না। অত্যন্ত সৎ জীবনযাপন করেছেন। অসুস্থতার খবর পেয়ে গতকাল উনার পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি, চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করাও কঠিন হয়ে পড়েছিল। তখন উদ্যোগ নিয়েছিলাম কিছু করার। সেই সুযোগ আর পেলাম না।”

১৯৭৭ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে চট্টগ্রাম পৌর কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন গোলাম সাইয়েদ মিন্টু। এরপর ১৯৯৪, ২০০০, ২০০৫, ২০১০, ২০১৫ এবং সবশেষ গত জানুয়ারির সিটি নির্বাচনে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

৪০ বছর ধরে নিরামিষভোজী মিন্টু চলাফেরা করতেন হেঁটে অথবা রিকশায়, থাকতেন জয়নগরের পৈত্রিক বাড়িতে। তিনি পরিচিত ছিলেন তার ঢোলা পাঞ্জাবি-পাজামার জন্য। এক ছেলেকে রেখে গেছেন তিনি।  

কাউন্সিলর হিসেবে প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ঘনিষ্ঠ সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ছিলেন। চট্টগ্রামে মুক ও বধিরদের অধিকার আদায়েও তিনি সক্রিয় ছিলেন।

তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু এলাকাবাসীর অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন। নিজের নির্বাচনী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে তিনি সর্বদা সোচ্চার ছিলেন। উনার মৃত্যুতে নগরবাসী একজন সাদামাটা সত্যিকারের জনপ্রতিনিধিকে হারালো।

“তিনি বারবার নির্বাচিত হয়ে অপরাজেয় হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন। আরেকটি বিষয়ে তিনি বিজয়ী ছিলেন, রাজনীতিতে অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে তিনি একজন উদাহরণ। নিরামিষ ভোজী ছিলেন, গান্ধীর অহিংস নীতির প্রতি তার অত্যন্ত শ্রদ্ধাবোধ ছিল, সাধারণ মানুষের অত্যন্ত কাছে থাকতেন। খুব মার্জিতভাবে কথা বলতেন, মানুষের সেবায় নিজেকে আজীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তিনি।”

মিন্টুর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টুর মৃত্যুতে একজন গুণী মানুষকে আমরা হারালাম, যিনি সবসময় জনগণের কাতারে ছিলেন এবং সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন।”

নগর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য চন্দন ধর জানান, ঢাকা থেকে মিন্টুর মরদেহ চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর প্যারেড ময়দানে তার জানাজা হবে।