অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়াই বেশি প্রয়োজন: তথ্যমন্ত্রী

গুজব-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে নেতাকর্মীর সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2021, 02:06 PM
Updated : 6 March 2021, 02:06 PM

শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি নেতাকর্মীদের সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের প্রচার করার পরামর্শ দেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, “বড় বড় স্লোগান ও ছবি তুলে ফেইসবুকে দেওয়ার চেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে অপপ্রচারগুলোর বিরুদ্ধে সুপ্রচার চালানো, উন্নয়ন ও অর্জনের কথা প্রচার করা। সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রপচারের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও আওয়ামী লীগের অর্জনগুলো তুলে ধরা।

“আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের ভালো প্রচার ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার কর্মীদেরও মূল্যায়ন করব।”

বিএনপি ও তাদের মিত্ররা লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জন্য মায়াকান্না করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার মৃত্যু যে স্বাভাবিক, তা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

মুশতাক আহমেদকে গ্রেপ্তারের কারণ ব্যাখ্যায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, “‘তিনি করোনা মহামারী নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ধরনের পোস্ট দিচ্ছিলেন। একটি পেজ থেকে নানাভাবে গুজব ছড়াচ্ছিলেন, সেই কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

“জামিন কেন পাননি, সেটি কোর্ট বলতে পারবে, এই এখতিয়ার কোর্টের। তার মৃত্যুটা স্বাভাবিক মৃত্যু, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এভাবে ছেলেধরা নিয়েও গুজব ছড়ানো হয়েছিল।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের দেশে যখন কোনো অর্জন হয়, আমরা যখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেলাম, তখন একটি পক্ষ লেগে গেল অন্য বিষয় নিয়ে মাঠ গরম করার জন্য। অথচ এটি নিয়ে একটি অভিনন্দন তাদের মুখ থেকে আসেনি। এটি তাদের একপেশে ও চিন্তার দৈন্যতা। দেশের অর্জন যে তাদের চোখে পড়ে না, কানে যায় না সেটিরই বহিঃপ্রকাশ।”

বিএনপি ৭ মার্চ পালনের ঘোষণা দেওয়ায় তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “এতদিন পরে তাদের বোধদয় হল। মির্জা ফখরুল সাহেব এটিও বলেছেন ৭ মার্চ ইতিহাস, এই ইতিহাসকে আমাদের স্বীকার করতে হবে। আমি ফখরুল সাহেবদের বলব বাকি যে ইতিহাস বিকৃতি করেছিলেন, সেটাও ভুল স্বীকার করুন। তাহলে জাতি আপনাদেরকে সাধুবাদ দেবে।”

তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, “বাঙালি একটি নিরস্ত্র জাতি ছিল, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের একটি ভাষণের মাধ্যমে নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র বাঙালিতে রূপান্তরিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বললেন, তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থেক, শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।

“বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এমন একটি ভাষণ ছিল, যার যা কিছু ছিল তা নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। যে ভাষণ আজও যে কেউ শুনলে যেভাবে উদ্দীপ্ত হয়, এমন কোনো নেতার ভাষণ বিশ্ব ইতিহাসে প্রকৃতপক্ষে কেউ দেননি।”

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে লেখা হয়েছিল, চতুর শেখ মুজিব প্রকৃত অর্থে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করে দিয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য তাকে অভিযুক্তও করা যাচ্ছে না। এমনভাবে বঙ্গবন্ধু বললেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম।

“এর মাধ্যমে সেদিন রিপোর্টার ও তরুণদের উদ্দীপ্ত করেছিল এই ভাষণ। এখনও এই ভাষণ শুনলে মানুষ থমকে দাঁড়ায়, এজন্য বিশ্ব ইতিহাসে এটি একটি বিরল ভাষণ।”

উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ন সম্পাদক দেবাশীষ পালিতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন প্রাবন্ধিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মো. শামসুল হক।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. আতাউর রহমান, সহসভাপতি মো. মঈন উদ্দিন, ফখরুদ্দিন চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।