বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
লালদিয়ার চরে জমি ‘দখলে রেখে’ যারা আর্থিক ‘ফায়দা লুটেছে’ তাদের তালিকা করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
উচ্চ আদালতের নির্দেশে কর্ণফুলী নদীর তীরে লালদিয়ার চরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলে আন্দোলনে নামে লালদিয়ার চরে বাসিন্দারা।
১৯৭২ সালে বিমান ঘাঁটি সম্প্রসারণের সময় স্থায়ী বন্দোবস্তি পাওয়ার আশ্বাসের ভিত্তিতে নিজেদের ভিটামাটি ছেড়ে লালদিয়ার চরে বসতি শুরু করে স্থানীয় কয়েকশ পরিবার। এখন ওই এলাকায় ২৩০০ পরিবারের ১৪ হাজার মানুষের বসবাস।
উচ্ছেদের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, “পৃথিবীর কোনো বন্দরে এত বেশি জনবসতি বা যানবাহন চলাচল করে না। আমরা সে জায়গাগুলোতে আধুনিকায়ন করতে চাচ্ছি। বিদেশিরা যখন আসে, যখন দেখে বন্দরের মধ্যে এত চলাচল, এত বস্তি, বাড়িঘর, তখন কিন্তু আমাদের বন্দরটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।”
তিনি বলেন, “অবৈধভাবে কেউ কোনোকিছু দখল করে রাখার কোনো সুযোগ নাই। কেউ যদি অপারগ হয়, কারও যদি কোনো ঠিকানা না থাকে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তাদেরকে ঠিকানা দেবেন। কিন্তু অবৈধভাবে যারা দখল করে থাকবে, তাদেরকে আমরা উচ্ছেদ করব।
“শুধু তাই নয়, যারা এতদিন যাবত এগুলো দখল করে রেখে ফায়দা লুটেছে, তাদেরও তালিকা আমরা তৈরি করছি। সময় নিয়ে সে সকল চিহ্নিত অপরাধীদেরকেও আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।”
উচ্ছেদ কখন করা হবে- এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “উচ্ছেদ একটা চলমান প্রক্রিয়া।”
লালদিয়ার চরে বসবাসকারীদের পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা সে পর্যায়ের মানুষ না। পুনর্বাসন আমরা তাদেরকে করব যারা গৃহহীন, যাদের কোনো সহায় সম্বল নাই। যারা স্বচ্ছল তাদের পুনর্বাসন করার কোনো সুযোগ নাই। যাদেরকে পুনর্বাসন করব ইতোমধ্যে আমাদের তালিকা হয়ে গেছে।
“যারা এখানে আছে অধিকাংশই ভাড়াটিয়া। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল দখল করে ভাড়াটিয়া রেখে অর্থ আদায় করছে। কারণ কম ভাড়ায় এখানে থাকতে পারে। এরা সকলে স্বচ্ছল পরিবাররা থাকে। অন্য জায়গায় যাওয়ার মতো অবস্থা তাদের আছে।”
সরকারদলীয় নেতারাও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যারা কথা বলছেন, তারা হয়ত স্থানীয়ভাবে তাদের সাথে যুক্ত আছেন। তাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন উঠাবসা করেছেন। একটা সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, সেই জায়গা থেকে হয়ত কথা বলছেন।
“কিন্তু বাস্তবতা হল, চট্টগ্রাম বন্দরকে আমরা যদি আধুনিক করতে চাই। তাহলে এই পদক্ষেপগুলোর কোনো বিকল্প নেই।”
উচ্ছেদের পর লালদিয়ার চর নিয়ে পরিকল্পনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এগুলো আমাদের বন্দরের কাজেই লাগবে। অন্য কাউকে আবার এখানে যুক্ত করার প্রশ্নই উঠে না।