একুশ নিয়ে এখনও ফতোয়ায় হতাশ মেনন

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও বাংলা ভাষা নিয়ে ‘ধর্মবাদী’ প্রচারণায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Feb 2021, 02:16 PM
Updated : 22 Feb 2021, 02:17 PM

ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আয়োজনে রোববার রাতে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সভায় তিনি এই হতাশা প্রকাশ করেন।

মেনন বলেন, “পত্রিকায় দেখেছি বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক ইমাম সাহেব ফতোয়া দিয়ে বলেছেন, ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি কোনো মোনাজাত করা যাবে না। শিশু-কিশোররা কলাগাছ দিয়ে যে শহীদ মিনার বানিয়েছিল, সেই ফতোয়ার মাধ্যমে সেটাকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় লোকজন।

“এটা কেবল তার বক্তব্য ধরলেই হবে না। এই সাম্প্রদায়িক প্রচারণা আজকে শুধু বিদ্যমান তাই নয় তাকে বাস্তবায়নের নানা ধরণের চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে। আমরা যদি দেখি মাদ্রাসাগুলোতে জাতীয় সঙ্গীত যেখানে বাজানো হয়, সেটাকে ধর্মীয়করণ করা হয়েছে।”

মেনন বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অর্থহীন হয়ে যাবে, যদি ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারি। কারণ ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের স্বাধীনতা এবং এই স্বাধীনতার পথ ধরেই আজ সুবর্ণজয়ন্তি।  

“ভাষার অধিকারের প্রশ্ন ছিল সর্বজনীন এবং ভাষা আন্দোলনের চরিত্র ছিল অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকে এই বাংলাদেশেও- যেখানে আমরা পাকিস্তানে লড়াই করে ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি, যেখানে সংবিধানে রাষ্ট্রভাষা বাংলার বিধানটি সংযোজিত আছে, সেখানে এখন বাংলাভাষা কেবল উপেক্ষিতই নয় সেসময় ভাষা নিয়ে যে ধর্মবাদী প্রচারণা ছিল তা আজকেও অব্যাহত রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “দ্বিতীয়ত যে বিষয়টি বলা প্রয়োজন- এই বাংলাদেশে আজ ভাষার প্রশ্নটি কীভাবে উপেক্ষিত। ইংরেজি না জানলে পরে আমরা যদি হীনমন্যতায় ভুগি..।

“কথা ছিল যে ভাষার প্রশ্নে উন্নয়ন করা হবে। একসময় বাংলা উন্নয়ন একাডেমি করা হয়েছিল। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছর এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও সেই পুরনো পরিভাষার দোহাই দেওয়া হয়।”

সরকারের উদ্দেশে এই সংসদ সদস্য বলেন, “পরিভাষাগত যে ঘাটতির কথা বলা হচ্ছে তা খুব সহজ করে পরিভাষা করার ব্যবস্থা যেন নেয়। প্রয়োজনে আলাদা প্রতিষ্ঠান করে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তা শেষ করা উচিৎ। ভাষার বিকৃতি ঘটছে রেডিও-টেলিভিশনে। এই বিকৃতিও বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করি।”

ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা কমিটির সভাপতি আবু হানিফ। সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সদস্য মনসুর মাসুদ, দিদারুল আলম চৌধুরী, মনসুরুল হক বাবুল, ইন্দ্র কুমার নাথ, আবু সৈয়দ বলাই, মোক্তার আহমদ, শামসুল আলম, সুপায়ন বড়ুয়া ও আবদুর রশিদ প্রমুখ।