খুলশী থানার জাকির হোসেন রোডের ‘হেলথ অ্যান্ড ফেয়ার’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শনিবার রাতে অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- ইফতেখার করিম চৌধুরী (৪৮), সোহেল (২৬), ফয়সাল (২০), নজরুল ইসলাম (৪১), জামাল হোসেন (৪১)। এদের মধ্যে ফয়সালের বাসা হালিশহর বি-ব্লকে, আর অন্যদের বাসা লালখান বাজার এলাকায়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মোহাম্মদ আব্দুর রউফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মাথায় চুল গজানোর প্রতিষ্ঠান ‘হেলথ অ্যান্ড ফেয়ারের’ মালিক মান্নান শেখ।
“শনিবার রাতে আমাদের কাছে তথ্য আসে ‘হেলথ অ্যান্ড ফেয়ার’ নামের প্রতিষ্ঠানটিতে ইয়াবা ও কার্তুজ আছে। সে তথ্যে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল অভিযানে যায়। অভিযানকারী দলকে সোর্স বসার সোফার নিচ থেকে ২০০ পিস ইয়াবা ও চার রাউন্ড কার্তুজ শনাক্ত করে দেয়, আমরা সেগুলো উদ্ধার করলেও সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
“ঘটনাস্থলে পুলিশ যাওয়ার আগে ভুঁইফোড় অনলাইন পত্রিকার কথিত চার সাংবাদিক উপস্থিত ছিল, যেটি সন্দেহের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। ঘটনাস্থলে থাকা ফয়সালের আচরণও সন্দেহজনক মনে হয়। টিমের সদস্যদের কাছ থেকে এসব তথ্য পেয়ে ডিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান এবং ওই কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করেন।”
তিনি জানান, সোহেলকে ইয়াবাগুলো দিয়েছেন নজরুল, যিনি পেশায় গাড়িচালক। নজরুল ইয়াবাগুলো পেয়েছেন ইফতেখার করিম চৌধুরীর কাছ থেকে। আর অটোরিকশা চালক জামাল তার গাড়িতে করে সোহেল ও মাথায় চুলবিহীন ওই ব্যক্তিকে দোকানটিতে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এই পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন।
“ইফতেখার করিম চৌধুরী এবং নজরুল খুবই ঘনিষ্ঠ। নজরুলের তথ্য অনুযায়ী, ইফতেখার তাকে ইয়াবা ও কার্তুজ দিয়ে ব্যবসায়ী মান্নান শেখকে ফাঁসানোর দায়িত্ব দেয়। তখন নজরুল অটোরিকশা চালক জামালের মাধ্যমে ফয়সাল ও সোহেলকে এ কাজের জন্য ভাড়া করে। তবে ইফতেখার করিম চৌধুরী কেন মান্নান শেখকে ফাঁসাতে চেয়েছেন, এর পেছনে কারা আছেন সেটা আমরা এখনও জানতে পারিনি। ইফতেখার কোনোভাবেই মুখ খুলছেন না। মান্নানও বলেছেন, ইফতেখারকে তিনি চেনেন না। এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমরা আদালতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছি।”
তবে পুরনো ব্যবসায়ীক বিরোধের জেরে আগের অংশীদার এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে ধারনা ‘হেলথ অ্যান্ড ফেয়ারের’ মালিক মান্নান শেখের।
তিনি বলেন, “ঢাকার বনানীতে আমার একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান ছিল, আমার সঙ্গে পার্টনার ছিলেন দু’জন। তারা পরে আমাকে বের করে দেন। তাদের সঙ্গে আমার জমির ব্যবসাও ছিল। আমার দু’জন স্টাফকেও তারা নিয়ে যায়।
“এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ হয়। গ্রেপ্তার কাউকে আমি চিনি না। আমার ধারণা, ব্যবসায়িক বিরোধের কারণে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে।”