ফারুক-রশিদকে বিরোধী দলীয় নেতা বানানোই ‘জিয়ার বঙ্গবন্ধু হত্যায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ’

চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, বিএনপি সরকার আমলে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশিদকে বিরোধী দলীয় নেতা বানানো জাতির জনক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দলটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘সম্পৃক্ততার প্রমাণ দেয়’।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2021, 04:55 PM
Updated : 15 Feb 2021, 04:55 PM

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ‘গণতন্ত্র ধ্বংস ও ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের’ প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

নগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে এই সমাবেশ হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র নাছির উদ্দীন বলেন, “১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচনে গণতন্ত্র শুধু ধুলিস্মাৎ হয়নি, ভোটারবিহীন নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতাসীন হওয়ার পর তারা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশিদকে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়ে প্রমাণ করেছে- বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জড়িত ছিল।

“কিন্তু এই প্রহসনমূলক নির্বাচনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সারা দেশে তুমুল আন্দোলন গড়ে উঠলে ওই অবৈধ সরকার তিন মাসের মাথায় ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল।”

নাছির বলেন, “বিএনপি একটি আদর্শবিহীন নীতিচ্যুত অরাজনৈতিক অপশক্তি। এই দলটির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। তাদের একটি মাত্র লক্ষ, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নস্যাৎ করা।

“বিএনপি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একাধিকবার ক্ষমতায় এলেও তাদের কোনো সফলতা নেই। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কোনো অবদান নেই। তাদের সফলতা বলতে আছে হাওয়া ভবন বানিয়ে দেশকে বার বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে বিদেশে অর্থপাচার করা।”

এই আওয়ামী লীগ নেতা অভিযোগ করেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ‘১ কোটি ৩০ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকাভূক্ত করেছিল’। শেখ হাসিনা এর বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করলে এক-এগারোর সময় তৎকালীন সরকার ওই ভুয়া ভোটার চিহ্নিত করে তাদের বাদ দেয়।

“অতীতের মতো দেশবিরোধী নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিদেশে বসে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাই কোনো অপপ্রচার ও বিভ্রান্তির শিকার হওয়ার  অবকাশ নেই। ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।”

সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের ফলে চ্যাম্পিয়নের খ্যাতি অর্জন করেছিল। তাদের আমলে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে একযোগে দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গিবাদের উত্থান জানান দেওয়া হয়।

“বিএনপি-জামাত জোট বাঙালি জাতিসত্তার বিরুদ্ধে একের পর এক চক্রান্ত করছে। কিন্তু তারা তখনও সফল হয়নি এবং হবেও না। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসনমূলক নির্বাচন শুধু বাংলাদেশকে নয়, বিশ্ব সভ্যতাকেও কলঙ্কিত করেছে। এই অপশক্তি বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে না। কারণ তারা সব সময় একাত্তরের পরাজিত শক্তিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছে এবং এখনও দিচ্ছে।”

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নগর কমিটির উপদেষ্টা শফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, শ্রম সম্পাদক আব্দুল আহাদ প্রমুখ।