গৃহবধূ সুপ্তি হত্যা রহস্যে নতুন মোড়

চট্টগ্রামে নিজ বাসা থেকে গৃহবধুর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্বামী, ভাসুরকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। দুই মাস পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অপর এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর বলছে, হত্যাকাণ্ডে তারা জড়িত ছিলেন না।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Jan 2021, 12:29 PM
Updated : 16 Jan 2021, 12:29 PM

এ ঘটনায় পিবিআইর হাতে গ্রেপ্তার জাকির হোসাইনের (২৭)বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে হলেও পরিবারসহ তারা থাকেন রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনায়।

পিবিআইর দাবি, এই জাকিরই গৃহবধু সুপ্তি মল্লিককে হত্যা করেছেন।

জাকির বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফিউদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিও দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি জানান, গত ১৩ জানুয়ারি রাতে ঢাকার আশুলিয়া থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি সুপ্তির দুইটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়।

গতবছরের ৪ নভেম্বর রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানার পানওয়ালা পাড়ার একটি বাসা থেকে পুলিশ সুপ্তি মল্লিকের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল সুপ্তিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সুপ্তির বাবা সাধন মল্লিক ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় সুপ্তির স্বামী বাসুদেব চৌধুরী ও ভাসুর অনুপম চৌধুরীকে আসামি করা হয়। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারেও পাঠায়।

সুপ্তি মল্লিক

সুপ্তির পরিবারের সদস্যরা লাশ উদ্ধারের পর জানিয়েছিল ১৩ অগাস্ট সুপ্তির সঙ্গে বাসুদেবের বিয়ে হয়।

পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ জানান, লাশ উদ্ধারের পর থানা পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআই অধিগ্রহণ করে পুরোপুরি তদন্তভার নেয়।

তাদের তদন্ত শুরুর পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নিশ্চিত করে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকা থেকে জাকিরকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি।

“জাকির জানিয়েছে, চন্দ্রঘোনায় কাছাকাছি বাড়িতে থাকার সুবাদে ২০১৪ সাল থেকে সুপ্তির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ২০১৮ সালে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। কয়েক মাস সংসার করার পর তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরবর্তীতে সুপ্তি পারিবারিকভাবে আবার বিয়ে করে।

“ঘটনার দিন সুপ্তি ফোন করে জাকিরকে বাসায় ডেকে নেন। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে জাকির গলায় গামছা পেঁচিয়ে সুপ্তিকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায়। সন্দেহের বাইরে থাকায় সুপ্তির মোবাইল ফোন সেটগুলোও নিয়ে যায় এবং ঢাকায় আত্মগোপন করে।”

পিবিআই কর্মকর্তা সন্তোষ বলেন, “জকির একাই সুপ্তিকে খুন করেছে বলে আমাদের তদন্তে এসেছে। এ হত্যাকাণ্ডে তার স্বামী বাসুদেব ও ভাসুর অনুপমের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আমরা আদালতে প্রতিবেদন দেব।”