চট্টগ্রামে সহিংসতা রুখতে পুলিশের তৎপরতা বৃদ্ধি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা রোধে কঠোর হচ্ছে মহানগর পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Jan 2021, 03:57 PM
Updated : 14 Jan 2021, 03:57 PM

নগরীর আগ্রাবাদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহতের দুই দিনের মাথায় চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) পক্ষ থেকে নিরাপত্তা কড়াকড়ি করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে সিএমপির পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং বৃহস্পতিবার রাত থেকে  নগরজুড়ে বিশেষ টহল শুরু করা হয়েছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার নগর পুলিশের মাসিক অপরাধ সভায়ও সিএমপি কমিশনারের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নগরজুড়ে চেকপোস্ট ও নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে এবং তা সিটি নির্বাচনকে ঘিরেই্ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এ বিশেষ টহল চলবে।”

পুলিশের ‘মুভমেন্ট’ বাড়ানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় সেজন্যই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

মাসিক অপরাধ সভায় নির্দেশনা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে নগর পুলিশের প্রধান বলেন, “পেশাদারিত্বের মাধ্যমে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থেকে অস্বাভাবিক না হয় সেজন্য পুলিশ সর্বোচ্চ কাজ করবে।”

বৈঠকে উপস্থিত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিয়মিত আলোচনার পাশাপাশি সভায় সিটি নির্বাচন নিয়ে নানা নির্দেশনা দেন সিএমপি কমিশনার।

নির্বাচনী সহিংসতায় ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে দুজন খুন হয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর এবং একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদেরের সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত হয় একজন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় আরও কয়েকজন।

এছাড়া গত বছরের মার্চ মাসে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আগে পাহাড়তলী সরাইপাড়া এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও গতবারের কাউন্সিলর মোর্শেদ আক্তারের সমর্থক মো. তানভীর নামে একজন নিহত হন।

মঙ্গলবারের ঘটনার পর পুলিশ ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কাদেরসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশের একটি প্রতিবেদনেও এসব বিষয় উল্লেখ করে বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের ৪১টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ৮১ জন। আর সংরক্ষিত আসনে পাঁচজন। এদের মধ্যে একজন মহিলা কাউন্সিলরসহ ১৪ জন গতবারের কাউন্সিলর ছিলেন।

এসব বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার সহিংস ঘটনা ঘটেছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

এদিকে দুপুরে বৈঠকে নির্দেশনার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

নগরীর বৌদ্ধ মন্দির মোড়ে তল্লাশিতে অবস্থান করা নগর পুলিশের কোতয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে মাসিক অপরাধ সভায় কমিশনার স্যার নির্দেশনা দিয়েছেন চসিক নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশের নজরদারি বাড়ানোর।

“পুলিশ সদস্যরা বিশেষ করে মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস তল্লাশি করছে। এখানে অনৈতিক কিছু হচ্ছে কি না পর্যবেক্ষণ করছি।”

কোতয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, “ভোট আনন্দের, ভোট উৎসবের, একে আমরা আতঙ্কের হতে দেব না। সবাই নিয়ম নেমে প্রচার-প্রচারণা করবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে আমরা ব্যবস্থা নেব।”

তিনি বলেন, “আমরা মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট করছি। অলিগলিতে গাড়ি-মোটরসাইকেল দিয়ে পুলিশ সদস্যরা টহল শুরু করেছে।

“পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তথ্যও সংগ্রহ করছি। প্রার্থীদের সাথেও ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ রাখছি. যাতে কোনো ধরনের ঘটনা না ঘটে।”