যাদের মদদে খুন, তাদেরও বিচার চান নওফেল

চট্টগ্রামে নির্বাচনী সংঘাতে নিহত আওয়ামী লীগকর্মী আজগর আলী বাবুলের জানাজায় গিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের ‘নেপথ্যে যারা ছিলেন’, তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2021, 03:24 PM
Updated : 13 Jan 2021, 03:24 PM

মঙ্গলবার রাতে নগরীর মোগলটুলি মগপুকুরপাড় এলাকায় ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে বাবুল (৫৫) মারা যান এবং অপর একজন গুলিবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত হন।

২৮ নম্বর ওয়ার্ডের গতবারের কাউন্সিলর আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এবার দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে বাহাদুরকে মনোনয়ন দেয়।

আগে একাধিক মেয়াদে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া বাহাদুর প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মহিউদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের সাথে আছেন বাহাদুর।

বুধবার বিকেলে নিহত বাবুলকে শেষবারের মতো দেখতে আগ্রাবাদের সরকারি কমার্স কলেজের সামনের সড়কে যান চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য নওফেল এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

এ সময় নওফেল বলেন, “আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একটি চক্র মাঠে নেমেছে। পরিকল্পিতভাবে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে শুধু তারা নয়, যারা এর নেপথ্যে আছে তাদের যদি দলীয় পদ থেকে থাকে তাহলে বহিষ্কার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, “হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র যেন অতি দ্রুত উদ্ধার করা হয়। জড়িত সন্ত্রাসীদের দ্রুত খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হোক।”

পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেন তিনি।

নিহত বাবুলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

এ সময় মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আজগর আলী বাবুল আওয়ামী লীগের নিবেদিত প্রাণ কর্মী। সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। খুনি যে-ই হোক তাদের শাস্তি পেতে হবে।”

নিহতের স্বজনদের সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসীদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে না। সন্ত্রাসী মানে সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু। যথাযথ আইনের আওতায় এনে বাবুলের খুনিদের শাস্তির বিধান করা হবে বলে আমি আশাবাদী।”

নিহত আজগর আলী বাবুল মহল্লা সর্দার এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন।

জানাজায় নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ ও শফিক আদনান, প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, শ্রম সম্পাদক আবদুল আহাদ, নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু, ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

বিকেল পৌনে ৫টায় কমার্স কলেজের সামনের সড়কে বাবুলের জানাজা হয়।

আজগর আলী বাবুল হত্যায় তার ছেলে নগরীর ডবলমুরিং থানায় আব্দুল কাদেরসহ ১৩ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ওই মামলায় বুধবার বিকেলে কাদেরসহ গ্রেপ্তার ১১ জনকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ড এবং ১৫টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ ৫৫টি কাউন্সিলর পদের মধ্যে ৩৫টিতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে আছেন।

এর মধ্যে গত মেয়াদের নির্বাচিত কাউন্সিলরদের মধ্যে ১৪ জন দলের মনোনয়ন না পেয়ে এবার বিদ্রোহী হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই সাবেক মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।