সংঘাতে প্রাণহানি: কাউন্সিলর প্রার্থী কাদেরসহ ১১ জন রিমান্ডে

চট্টগ্রামে নির্বাচনী সংঘাতে একজন নিহতের মামলায় কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কাদেরসহ ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2021, 12:38 PM
Updated : 13 Jan 2021, 12:38 PM

অপর আসামিরা সবাই কাদেরের সহযোগী। তারা হলেন- এম কে কবির হেলাল উদ্দিন (৪০), ওবায়দুল কবির মিন্টু (৪০), আসাদুজ্জামান নূর রায়হান (২৯), ইমরান হোসেন ডলার (২৪), দিদার উল্লাহ দিদু (৪৮), মিনহাজ হোসেন ফরহাদ (২০),  শহীদুল আলম সাহেদ (৩৭), জাহিদুল আলম জাহিদ (২৫), শহিদুল ইসলাম (৩৩), আব্দুর রহমান (৪৪)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের (পশ্চিম) পরিদর্শক মো. শাহাদাত হোসেন খান বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম শফি উদ্দিন শুনানি শেষে প্রত্যেকের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী মনজুরুল আলম চৌধুরী জানান। 

মঙ্গলবার রাতে নগরীর মোগলটুলি মগপুকুরপাড় এলাকায় ২৮ নম্বর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর ও বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদেরের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়।

এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আজগর আলী বাবুল (৫৫) নামে একজন নিহত এবং অপর একজন গুলিবিদ্ধসহ কয়েকজন আহত হন।

এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সেজান মাহমুদ সেতু বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কাদেরসহ ১৩ জনকে আসামি করে ডবলমুরিং থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় আব্দুল কাদেরকে। তার পরে নাম দেওয়া হয়, এম কে কবির হেলাল উদ্দিন, ওবায়দুল কবির মিন্টু, আব্দুল ওয়াদুদ রিপন, আব্দুর রহিম রাজু ওরফে বিহারি রাজু, আসাদ রায়হান, আলা্উদ্দিন আলো ওরফে পিচ্চি আলো, ইমরান হোসেন ডলার, দিদার উল্লাহ দিদু, সালাউদ্দিন সরকার, দেলোয়ার রশিদ, মো. আলমগীর ও আব্দুল নবীকে।

রাতেই মোগলটুলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে কাদেরসহ অন্তত ২৫ জনকে আটক করে মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে।

পরে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে কাদেরসহ ওই ১১ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) মনজুর মোরশেদ জানান।

এদের মধ্যে ছয়জনের নাম মামলায় উল্লেখ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বাকিদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

মামলায় সেজান লিখেছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুরের সাথে তিনিও তার বাবাসহ অনেকেই মগপুকুরপাড় এলাকায় জনসংযোগে যান। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মগপুকুর জব্বার সওদাগর বিল্ডিংয়ের সামনে পৌঁছালে কাউন্সিলর প্রার্থী আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে তাদের ওপর হামলা করা হয়।

“এ সময় কাদেরের নির্দেশে হেলাল, আব্দুল ওয়াদুদ রিপন, আব্দুর রহিম রাজু, আসাদ রায়হান তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আজগর আলী বাবুল ও মাহবুবকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছুঁড়ে। অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা লাঠিসোঁটা নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে।

“তাদের গুলি আমার বাবা আজগর আলী বাবুলের পিঠের বাম পাশে এবং মাহবুবের ডান পায়ের উরুতে লাগে। বাবাকে বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর মাহবুবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।”  

২৮ নম্বর ওয়ার্ডের গতবারের কাউন্সিলর আব্দুল কাদের ওরফে মাছ কাদের নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এবার দল তাকে মনোনয়ন না দিয়ে বাহাদুরকে মনোনয়ন দেয়।

বাহাদুর শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী। কাদেরের আগে ২০০০ সাল থেকে ২০১৪ সাল নাগাদ এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি।