মাতারবাড়িতে এল পণ্যবাহী প্রথম জাহাজ

মহেশখালীর মাতারবাড়ি চ্যানেল দিয়ে প্রথমবারের মত জাহাজ এল নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2020, 07:18 AM
Updated : 29 Dec 2020, 02:56 PM

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে এই চ্যানেল ব্যবহার করেই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ করা হবে।

মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১০টার পর পানামার পতাকাবাহী ‘ভেনাস ট্রায়াম্ফ’ নামের জাহাজটি মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মিত জেটিতে ভেড়ে বলে চট্টগ্রাম বন্দর কৃর্তৃপক্ষের সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন মো. আতাউল হাকিম সিদ্দিকি জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারি আরেকটি জাহাজ এই চ্যানেল ব্যবহার করে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে আসবে।

ইন্দোনেশিয়া থেকে মাতারবাড়িতে আসা ভেনাস ভেনাস ট্রায়াম্ফের দৈর্ঘ্য ১২০মিটার এবং ড্রাফট (জাহাজের পানির নিচের অংশ) পাঁচ দশমিক তিন মিটার।

বঙ্গোপসাগর থেকে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র পর্যন্ত চ্যানেলটির দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১৪ কিলোমিটার।

চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় হওয়ায় মাতারবাড়ির গভীর সাগরে পৌঁছানোর পর চ্যানেল ধরে জাহাজটিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেটিতে নিয়ে যান চট্টগ্রাম বন্দরের পাইলটরা।

বন্দর সচিব ওমর ফারুক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাতারবাড়ি চ্যানেলে এটিই প্রথম পণ্যবাহী জাহাজ।

মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। এই প্রকল্পে ১২ হাজার ৮৯২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান।

বাকি অর্থের মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২ হাজার ৬৭১ কোটি ১৫ লাখ টাকা, পাশাপাশি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে ২ হাজার ২১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এর সব নকশা জাপানি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে।

আগামী ২০২৬ সাল নাগাদ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে জাহাজ ভেড়ানোর আশা করছেন বন্দর কর্মকর্তারা।

এই প্রকল্পের অধীনে সংযোগ সড়কসহ গভীর সমুদ্র বন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দীর্ঘ দুটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এর ফলে বড় জাহাজ থেকে সরাসরি পণ্য ওঠানামা সহজ হবে।

প্রাথমিকভাবে মাতারবাড়িতে একটি কনটেইনার টার্মিনাল এবং একটি বহুমুখী পণ্য ওঠানো–নামানোর টার্মিনাল হবে। সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন বাড়ার সঙ্গে এই বন্দরের কার্যক্রমও ধারাবাহিকভাবে বাড়বে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর এ সমুদ্রবন্দর নির্মাণের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘নিপ্পন কোয়ে’র সঙ্গে চুক্তি সই হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে মাতারবাড়ির এই প্রকল্প এলাকা। ১৮০ মিটার চওড়া চট্টগ্রাম বন্দর চ্যানেল দিয়ে বর্তমানে সাড়ে নয় মিটার ড্রাফটের জাহাজ চলাচল করতে পারে।

আর ১৪ দশমিক পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ, ২৫০ মিটার চওড়া এবং সাড়ে ১৮ মিটার গভীরতার (ড্রাফট) মাতারবাড়ি চ্যানেল দিয়ে আট থেকে ১০ হাজার কনটেইনার পরিবহনের উপযোগী জাহাজ ভেড়ানো যাবে বন্দরে। ৮০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজও সেখানে ভিড়বে।