কুষ্টিয়ার এসপিকে বরখাস্তের দাবি হেফাজতের

ভাস্কর্য ভাংচুরের সমর্থকদের হুঁশিয়ারি দেওয়া কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাতকে বরখাস্ত করতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Dec 2020, 04:50 PM
Updated : 25 Dec 2020, 05:12 PM

শুক্রবার রাতে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীর গণমাধ্যমে পাঠানো একটি বিবৃতিতে এই দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “কুষ্টিয়ার এসপি এস এম তানভীর আরাফাত কর্তৃক তথাকথিত মৌলবাদের ধুয়া তুলে হাত ভেঙে দেওয়ার হুমকি সরকারি পোশাকে গণবিরোধী মাস্তানি।

“পুলিশের দায়িত্ব অপরাধ ঠেকানো এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আদালতে বিচারপ্রক্রিয়ায় পাঠানো। আর বিচার করবে আদালত। কিন্তু পুলিশ কোনো অপরাধীর হাত ভেঙে দিতে পারে না, কিংবা কোনো অপরাধীকে বিনাবিচারে জেল খাটাতেও পারে না। সরকারের কাছে আমরা অবিলম্বে উক্ত এসপিকে বরখাস্ত করার আহ্বান জানাই।”

কুষ্টিয়ায় ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে গত সপ্তাহে আয়োজিত এক সমাবেশে সেখানকার পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত বলেন, “আমি সত্যি দুঃখিত, লজ্জিত, আবেগাপ্লুত, রাগান্বিত। আমি এখানকার পুলিশ সুপার। খুবই লজ্জিত যে আমাদের এখানে দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। একটি জাতির পিতার ভাস্কর্য আরেকটি বাঘা যতীনের আবক্ষ।”

ভাস্কর্য ভাংচৃরকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। জাতির পিতার ভাস্কর্য আপনারা ভাঙেন, আপনাদের স্পর্ধা কত বড়! যাদের ধরা হয়েছে তাদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। কঠোরভাবে বলতে চাই, পরবর্তীতে এমন কোনো ঘটনা যদি ঘটে, সরকারকে একদম দুর্বল মনে করবেন না মৌলবাদী চক্র। হাত কিন্তু ভেঙে দিব।

বাংলাদেশ যদি পছন্দ না হয়, তাহলে পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তানভীর আরাফাত বলেছিলেন, “কোরআন আমরাও পড়েছি। কোরআন শরীফ চারবার খতম দিয়েছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমিও পড়ি। আপনি বলার কে আমি বেহেস্ত যাব, কি যাব না? বেহেস্তে যাওয়ার টিকেট কি আপনি আমারে দিবেন?”

হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করার পর হেফাজতের নতুন আমির জুনাইদ বাবুনগরীও ভাস্কর্য বসালে তা ‘টেনেহিঁচড়ে’ ফেলে দেওয়ার হুমকি দেন হাটহাজারীর এক মাহফিলে।

এরপর কুষ্টিয়ায় রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙা হয়। সবশেষ বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্যও ভাঙা হয় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া এলাকায়।

বিবৃতিতে হেফাজত নেতা আজিজুল জক ইসলামাবাদী বলেন, “আমরা মনে করি, ভাস্কর্য ভাঙার মত এ ধরনের স্যাবোট্যাজ ঘটিয়ে আলেম-ওলামার ওপর দায় চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা চলছে।

“সেইসাথে মৌলবাদ ও ধর্ম ব্যবসার জিগির তুলে আলেম-সমাজকে ছোট করার সংঘবদ্ধ প্রপাগান্ডা চলছে, যার পরিণতি কখনোই ভালো হবে না। যতই ক্ষমতা থাকুক, আল্লাহর গজব আসলে দুনিয়ার কোনো ক্ষমতা দিয়েই তা ঠেকানো যাবে না।”