চট্টগ্রামে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা

দুই বছর আগে ইয়াবা ও অস্ত্র দিয়ে ‘ফাঁসিয়ে’ মামলা করে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও মানহানির অভিযোগে নয় পুলিশ সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন শিক্ষানবিস আইনজীবী সমর কৃষ্ণ চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2020, 05:14 PM
Updated : 30 Nov 2020, 05:14 PM

সোমবার পটিয়ার যুগ্ম জেলা জজ আবদুল কাদেরের আদালতে তিনি মামলাটি করেন বলে তার আইনজীবী গৌতম চৌধুরী পার্থ জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, বিদ্বেষপূর্ণভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে হেয় করা, মানহানি ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা হয়েছে। আদালত মামলা গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

আগামী বছরের মার্চের শুরুতে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

আসামিরা হলেন- বোয়ালখালী থানার সাবেক এসআই আতিক উল্ল্যা, ওসি হিমাংশু কুমার দাশ, এসআই আরিফুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব আলম আখন্দ, এসআই আবু বকর সিদ্দিকী, এএসআই রিপন চাকমা, এএসআই আলাউদ্দিন, এসআই দেলোয়ার হোসেন, পিএসআই মাহবুবুল আলম এবং সঞ্জয় দাশ ও সজল দাশগুপ্ত।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলি গ্রামের বাসিন্দা সমর কৃষ্ণ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নগরীতে থাকেন।

গ্রামের বাসিন্দা স্বপন দাশের সাথে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক সঞ্জয় দাশের জমি সংক্রান্ত বিরোধে সমর কৃষ্ণ আইনগত সহায়তা দেন স্বপন দাশকে। একারণে ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্জয় দাশ পুলিশ সদস্যদের ‘ব্যবহার করে’ ওই ঘটনা ঘটায় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

এজাহারে বলা হয়, চট্টগ্রাম আদালত ভবন থেকে ফেরার পথে কোর্ট হিল রোডের একটি দোকানের সামনে থেকে ২০১৮ সালের ২৭ মে দুই পুলিশ সদস্য সমর কৃষ্ণকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে বোয়ালখালি থানায় আটকে তাকে মারধর করা হয়।

পরদিন রাতে হাতে হাতকড়া পরিয়ে চরণদ্বীপ এলাকায় কর্ণফুলী নদীর পাড়ে নিয়ে যায় ক্রসফায়ার দেয়ার উদ্দেশ্যে। পরে একটি ফোন পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে সমর কৃষ্ণকে নিয়ে বোয়ালখালি উপজেলার সারোয়াতলিতে তার বাড়িতে যায় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। 

বাড়ি থেকে পরে আবার থানায় নিয়ে মারধর শেষে ইয়াবা এবং অস্ত্র ও গুলি দিয়ে ছবি তোলে। তার বাড়ি থেকে অস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার দেখিয়ে মাদক আইনে দুটি এবং অস্ত্র আইনে একটি মামলা দিয়ে সমর কৃষ্ণকে কারাগারে পাঠানো হয়।

ওই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১০ মার্চ চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাতে সমর কৃষ্ণের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়। ওই প্রতিবেদন গত বছরের ২৮ অগাস্ট গ্রহণ করেন আদালত।

এরপর চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর সমর কৃষ্ণ বাদি হয়ে ‘ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়ার’ অভিযোগে আট পুলিশ সদস্যসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করলে আদালত তা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

আরও পড়ুন