শুক্রবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
নওফেল বলেন, “আজকে মৌলবাদী গোষ্ঠী সারা বাংলাদেশে একটা হুমকি- ধমকি দিয়ে মাঠ গরম করার চেষ্টা করছে। এখন আমাদের নীতি আদর্শে বিশ্বাসী কর্মীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এদেরকে প্রতিবাদ করি তাহলে এরা লেজ গুটিয়ে যাবে। আমরা জানি। কিন্তু আমরা গণতান্ত্রিক অধিকারে বিশ্বাসী বলে আমরা সেটা সম্মান দেখাই।”
হেফাজত নেতাদের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতার দিকে ইংগিত করে তিনি বলেন, “গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী হলে রাজনৈতিক দল গঠন করে রাজনীতি করেন, অসুবিধা নাই। কিন্তু ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে, ধর্মীয় একটা সংগঠন করে রাজনৈতিক কথা বলব নিজের রাজনৈতিক খায়েশ মেটানোর চেষ্টা করব, এ ধরনের কাজ আমাদের দেশে হচ্ছে।”
মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “কেন হচ্ছে? আমাদের মধ্যেও দুর্বলতা এজন্য দায়ী। আমাদের মধ্যে এদের অনেক অনুপ্রবেশকারী, এদের কার্যক্রমে বিশ্বাসী ঢুকে গেছে বলেই আজকে এত সাহস পাচ্ছে।
“আসুন আত্মসমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের শুদ্ধ করি। নিজেদের শুদ্ধ করতে পারলে পরাজিত শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।”
চট্টগ্রাম-৯ আসনের সংসদ সদস্য নওফেল বলেন, “যে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মাঠে আছে তারা বাতিল ফেরকার মানুষ, সুন্নিয়তবিরোধী মানুষ। এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যে দ্বীনে ইসলামে বিশ্বাস করে তার বিরোধী মানুষ। প্রতিবাদ করে এদের বিরুদ্ধে আমাদের দাঁড়াতে হবে।
“তারা যে কট্টরপন্থি মৌলবাদী সে ইসলাম আমরা চর্চা করি না। আমাদের যে নবী করিম (সা.) এর যে দ্বীনে ইসলাম, সকলের সাথে সদ্ভাব রেখে চলার ইসলাম। সেটার বিষয়ে আমাদের অবস্থান শক্তিশালীভাবে জানান দিতে হবে।”
শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বলেন, “পরাজিত শক্তিকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশে আমরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দিব না। ধর্মীয় উগ্রবাদ সকল ধর্মের জন্যই বিপজ্জনক। যেখানে যেখানে ধর্মীয় মৌলবাদ- আফগানিস্তান. পাকিস্তান আজকে তাদের কী অবস্থা আপনারা দেখেন।
“এই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক সহনশীল বাংলাদেশ হিসেবে আছে বলে এত বিনিয়োগকারী আসছে।”
মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “যারা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের আদর্শকে ধারণ করেন, শুধু আওয়ামী লীগের কথা বলছি না। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সকল প্রগতিশীল শক্তির সাথে একসাথে আওয়ামী লীগ আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে ছিল। সাংগঠনিক পরিচয় ছোট বা বড় হোক, আদর্শের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্ব দিয়েছেন।
চট্টগ্রামের প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে নওফেল বলেন, “এজন্য আমার ব্যক্তিগত অভিমত পারিবারিক পরিচয় হলেই যে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের শক্তি হবে, তা কিন্তু নয়। আমরা জানি জন্ম হোক যথা তথা কর্ম হোক ভালো। জানি যে, পারিবারিকভাবে একটা আদর্শের পক্ষে কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে তার বিরুদ্ধে।
“আবার এমনও আছে পারিবারিকভাবে অন্য ব্যাকগ্রাউন্ডের কিন্তু তারা নিজেকে পরিবর্তন করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করতে চান। এটাই আমাদের মাথায় রাখার প্রয়োজন আছে। শুধু ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থাকলেই যে আওয়ামী লীগ বা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের শক্তি তা কিন্তু না। ব্যক্তি হিসেবে সে কতটুকু জানে, বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে বা আদর্শকে ধারণ করে সেটা বিবেচনা করতে হবে।”