বুধবার নগরীর টাইগার পাসে অস্থায়ী নগর ভবনে সেবা সংস্থার সঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা জানান।
প্রশাসক সুজন বলেন, “চট্টগ্রাম এখন ধুলার নগরী। ওয়াসা ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য সড়ক কাটায় ধুলা, যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। নগরে যানবাহন থামার নির্দিষ্ট কোনো স্টপেজ নাই। অথচ নগরে ব্যবসার পরিধি বাড়ছে। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে।
“গুরুত্বপূর্ণ বিমান বন্দর সড়কে বন্দরের ট্রেলার, ভারী যানবাহনের কারণে দীর্ঘ যানজটে ওই এলাকায় শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষের প্রতিদিন কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের সাথে কোন সেবা সংস্থার দূরত্ব থাকুক তা চাই না। নগরীর উন্নয়নে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।”
নগরীকে নান্দনিক ও পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তুলতে সকল সেবা সংস্থাকে সমন্বিত উদ্যোগে উন্নয়ন কাজ পরিচালনার আহ্বান জানান প্রশাসক।
সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন বলেন, “আমরা অতীতের সব দূরত্ব ঘুচিয়ে সব প্রেণি পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। জলাবদ্ধতার চলমান মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি আউটার রিং রোড এর কাজ সম্পন্ন করা হচ্ছে।”
সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের মেয়াদে সমন্বয় সভায় শুরুর দিকে বিভিন্ন সেবা সংস্থার শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত থাকলেও পরে আর তারা উপস্থিত থাকতেন না। এ নিয়ে নাছির একাধিকবার ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
বুধবার প্রশাসক সুজনের সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় বেশ কয়েকটি সেবা সংস্থার শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, “নগরীবাসী আমাদের ভুল বোঝে সড়ক কাটার কারণে। পানি সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য আমরা সড়ক কাটছি।”
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নুরী বলেন, “যে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয় তা বিবেচনায় নিতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের চলমান কাজের প্রকল্প এলাকায় ধুলাবালি রোধ ও জননিরাপত্তার জন্য ঘেরা দেয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি এক ঘণ্টা অন্তর পানি ছিটাতে হবে।”
সভায় সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “অনেক সেবা সংস্থার উন্নয়ন কাজ সাব কন্ট্রাকে হওয়ার কারণে গুণগতমান ঠিক রাখা যাচ্ছে না। দূষণও বেড়ে গেছে।”
কেজিডিসিএল এর মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. সরওয়ার হোসেন বলেন, “২৫ হাজার গ্রাহকের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০ হাজার ডিমান্ড নোট জমা হয়েছে। নগরীতে এক লক্ষ ৪০ হাজার প্রিপেইড মিটার লাগানো হবে।”
নগরীতে দ্রুত আবাসিক সংযোগ দিতে প্রশাসককে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলার অনুরোধ করেন তিনি।
সিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হকের সঞ্চালনায় সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, সিসিসি সচিব মুহাম্মদ আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুফিদুল আলম, সিসিসি’র প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমেদ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ইমাম হোসেন, চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) জয়নুল আবেদীন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী, বিআরটি এর চট্টগ্রাম ডিভিশনের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।