চট্টগ্রামে ‘বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতালের’ যাত্রা

নগরীর পাহাড়তলী সাগরিকা রোডে বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বহুতল একটি ভবনে যাত্রা শুরু করেছে ‘বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতাল’।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2020, 02:28 PM
Updated : 20 Nov 2020, 02:29 PM

শুক্রবার বিকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয় ‘এক টাকায়’ দরিদ্র মানুষকে সেবা দিতে চলবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের হাসপাতালটির কার্যক্রম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “বিদ্যানন্দ মানবতার সেবায় অনুকরণীয় দায়িত্ব পালন করছে এবং করোনার সংকট মোকাবেলায় স্থাপিত কোভিড ফিল্ড হাসপাতাল একটি মাইলফলক হয়ে আছে।

“দরিদ্র মানুষ যেন বিদ্যানন্দ হাসপাতালে সেবা পায় সেজন্য প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল্ডিংটি বিদ্যানন্দকে দেওয়া হয়েছে। এমন উত্তম কাজে চট্টগ্রামবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে যেন শ্রমজীবী মানুষ চিকিৎসা সেবা পায়।”

বেসরকারি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নওফেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভবনটি আগে ছাত্রী হোস্টেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে সব সহযোগিতা দেওয়া হবে এই হাসপাতালের অগ্রযাত্রায়।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আউটডোর সেবার মাধ্যমে হাসপাতালটির যাত্রা শুরু হল এবং সেজন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাকি যেসব অনুমোদন লাগবে সেগুলোও দ্রুত দেওয়া হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের পরামর্শক ও সংবাদ সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) ব্যুরো প্রধান জুলহাস আলম বলেন, “বিদ্যানন্দ একটি কনসেপ্ট, একটি ধারণা। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, সমতার বাংলাদেশ, দরিদ্র মানুষের এগিয়ে যাবার বাংলাদেশ, অবহেলিত শিশুদের যত্ন পাবার অধিকারের বাংলাদেশ, উপযুক্ত শিক্ষা পাবার বাংলাদেশ, দুস্থ মায়েদের চিকিৎসা পাবার বাংলাদেশ, নিরন্ন মানুষের খাবার পাওয়ার অধিকারের বাংলাদেশের একটি ধারণাই হল বিদ্যানন্দ।”

মহামারীর সময় জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে নগরীর পতেঙ্গার একটি কমিউনিটি সেন্টারে ১০০ শয্যার সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হয়েছিল।

মাস খানেক আগে অর্থ সংকট ও স্থানাভাবে সেই হাসপাতালটি বন্ধ করা হয়। তখন নতুন হাসপাতাল চালুর জন্য ভবন দিতে সম্মত হয় প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।

এ হাসপাতালে প্রাথমিকভাবে আউটডোর সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সহায়তা দিতে একটি কোভিড ওয়ার্ডও রাখা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে থাকবে ২১ শয্যার জেনারেল ওয়ার্ড, ১২ শয্যার ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড, ১৬ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড ও এক শয্যার ডেন্টাল ইউনিট।

এছাড়াও দেশের প্রান্তিক জনপদে চিকিৎসা সেবা দিতে থাকছে টেলিমেডিসিন সার্ভিস। দেশ-বিদেশের অভিজ্ঞ কনসালটেন্টরা যুক্ত থাকবেন ছিন্নমূল মানুষের সেবায়।

এ হাসপাতালে দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা ও ওষুধ পাবেন এক টাকায়। এছাড়া টাকার পরিবর্তে নিজের কাছে থাকা নূন্যতম মূল্যের যেকোনো জিনিসের বিনিময়েও সেবা নেওয়া যাবে।

মাসে অন্তত ১০ হাজার রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে আশাবাদী বিদ্যানন্দ মা ও শিশু হাসপাতাল।