নিখোঁজ এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল মিলল ফটিকছড়িতে

প্রায় এক বছর আগে তক্ষক কিনতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম এসে নিখোঁজ এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে ফটিকছড়ির দুর্গম এলাকা থেকে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2020, 04:10 PM
Updated : 19 Nov 2020, 04:11 PM

ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুরের একটি পাহাড়ি এলাকা থেকে ওই এনজিও কর্মকর্তার কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা।

নিখোঁজ থাকা ওই ব্যক্তির নাম মো. হেলাল উদ্দিন (৩৭)। ঢাকার মুগদা থানার মদিনাবাদ এলাকার বাসিন্দা হেলাল ‘সেতুবন্ধন’ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপক ছিলেন।

তাকে খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে স্থানীয় রাজা মিয়া ও বিল্লাল নামের দুজনকে আটক করেছে পিবিআই।

২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা পিংকী ভুজপুর থানায় তার স্বামী নিখোঁজের ঘটনায় একটি মামলা করেছিলেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ওই বছরের ১৮ নভেম্বর তক্ষক কেনার জন্য ঢাকা থেকে তার স্বামী চট্টগ্রাম আসেন। ২৩ নভেম্বর তিনি জানতে পারেন- তার স্বামীকে একদল লোক ভুজপুর-রামগড় এলাকায় জিম্মি করে রেখেছে। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মিলছে না।

ভুজপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য যায় পিবিআইয়ের কাছে।

পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলার এসপি নাজমুল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চলতি বছরের ২৩ জুলাই রামগড়-বাগানবাজার এলাকায় পাহাড়ি পথে যাত্রী বহনকারী এক মোটর সাইকেলের চালক জাকির হোসেন রুবেলকে (২৪) এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রুবেল জানান, গত বছরের ২৩ নভেম্বর সকাল ১০টার দিকে বাগানবাজার ইউনিয়নের লালমাই গ্রামের জনৈক ‘রাজা ভাই’ তাকে বলেন পার্শ্ববর্তী চিকনছড়া বাজারে হেলাল নামে এক লোক এসেছেন, তাকে যেন মোটর সাইকেলে করে তার (রাজা) বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

রুবেল যখন হেলালকে নিয়ে রাজার বাড়িতে যান, তখন সেখানে ইসমাইল, সাদ্দাম ও বিল্লালকে দেখেছিলেন বলে জানান।

এরপর আর কিছু তিনি ‘জানেন না’ বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন রুবেল।

নাজমুল বলেন, গত বুধবার কৌশলে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিল্লাল জানায়, হেলালকে হত্যা করে লাশ খাগড়াছড়ির কাছে ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউনিয়নের নুরপুর এলাকার পাহাড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। তক্ষকের দামে বনিবনা না হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে।

বুধবার বিকালেই বিল্লালকে নিয়ে হেলালের লাশ উদ্ধারের জন্য দুর্গম পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৫০ ফুট গভীর একটি গর্তের ভেতর থেকে হেলালের কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়।

পিবিআই কর্মকর্তা নাজমুল জানান, উদ্ধার করা দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা এবং ময়নাতদন্ত করা হবে। ধারণা করছি, গত বছরের ২৩ নভেম্বরের পরই কোন এক সময় হেলালকে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।